‘যাদের রক্ত পানি করা টাকায় বেতন নিয়ে ভালো মন্দ খেয়ে অফিসে আসেন। তাদের কাছ থেকেই ঘুষ খান। বিদেশে টাকা পাচার করেন। যারা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনে তাদের ব্যাগ কেটে টাকা চুরি করেন। তাদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে আসেন, থানায় তুলে নিয়ে যাবেন। আবার তাদেরকে চেয়ার থেকে তুলে নিজের ক্যামেরার সামনে বসে দাঁত বের করে ক্যালান। একটুও লজ্জা লাগে না। একজন মানুষ হিসেবে নূন্যতম লজ্জার ঘর বলে কিছু থাকা উচিৎ!!! আপনাদের একটুও লজ্জা হয়না…!!!’ নিজের ফেসবুক পোষ্টে এভাবেই ঢাকা বিমানবন্দর নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন যমুনা টেলিভিশনের ক্রাইম রিপোর্টার আশিক মাহমুদ।
অপর দিকে নিউজ ২৪ এর চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান শেখ গোলামুন্নবি জায়েদ তার ফেসবুক পোষ্টে বলেন, ‘বিমানবন্দরে লাগেজ কাটা, চুরিতে প্রণোদনা দেয়া, দেরিতে লাগেজ দেওয়া এবং প্রবাসীদের কিভাবে আরো বেশি অপমান করা যায়? এই বিষয়ক একটা মন্ত্রণালয় করা হোক।’ উপরে উল্লেখিত পোষ্ট গুলো পরলে দেশের প্রধান বিমানবন্দরের চিত্র বুঝতে কারোরই কষ্ট হওয়ার কথা নয়।
বিমানবন্দরে যাত্রীদের নানা ভোগান্তি ও লাঞ্ছনার খবর প্রতিনিয়ত পাওয়া যায়। লাগেজ গায়েব হয়ে যাওয়া থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়ার ঘটনার মতো দুর্ভোগ মোকাবেলা করছেন যাত্রীরা। প্রবাসে কর্মরত শ্রমিকরা এ ঘটনার সবচেয়ে বেশি শিকার। তবে সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি নাড়া দেয় সাফবিজয়ী নারী ফুটবলারদের লাগেজ কেটে অর্থ বেহাত হওয়ার অভিযোগ ইস্যু।
এ ঘটনায় ফুটবল ফেডারেশন পৃথক দু’টি সাধারণ ডায়েরি করেছে। কিন্তু বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দাবি করছে- এ ঘটনা সেখানে ঘটেনি। তারা বলছে, বিমান অবতরণ থেকে দলটি বিমানবন্দর ছাড়া পর্যন্ত ভিডিও ফুটেজ যাচাই করা হয়েছে। সেখানে লাগেজ কেটে অর্থ সরিয়ে নেয়ার কোনো ঘটনা দেখা যায়নি।
সূত্রে জানাগেছে, প্রতিদিনই লাগেজ খোয়া যাওয়ার ঘটনা ঘটে। মূল্যবান জিনিস খোয়া যাওয়ার ঘটনা থেকে রেহাই পান না ভিআইপি যাত্রীরাও। অনেক সময় লাগেজ হারিয়ে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বিমানবন্দর ছাড়েন প্রবাসীরা। বিশেষ করে লাগেজসহ মালপত্র নিয়ে বিমানবন্দর পার হয়ে আসা যেন একটি যুদ্ধ। প্রায়ই লাগেজ পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। পাওয়া যায় না ট্রলি। যাত্রীদের মালপত্র নিজেদের মাথায় নিয়ে পার হতে হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু-বৃদ্ধরা এ অবস্থায় বিপদে পড়ছেন। অভিবাসী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানবন্দরের এমন অনিয়ম-দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও যাত্রী হয়রানি কঠোর হাতে বন্ধ করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে শুধু অবকাঠামোগতভাবে বিশ্বমানে উন্নীত করলেই হবে না। এর পরিচালন ব্যবস্থাপনাকেও স্বচ্ছ, গতিশীল, দুর্নীতিমুক্ত, নিরাপদ ও যাত্রীবান্ধব করার কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post