ইতিহাসে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী এক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান। উত্তপ্ত গরমের এই দেশটিতে যোগাযোগ এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা যেকোনো উন্নত দেশকে হার মানাবে। বহু লেন বিশিষ্ট সড়ক আর মহা সড়কে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। বছরের পর বছর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যু সেবা দিয়ে থাকে দেশটির সরকার। কখনো লোডশেডিং হয়েছে এমনটি দেখেননি প্রবাসীরা। এমনকি ২০ থেকে ৩০ বছর যাবত ওমানে আছেন, এমন প্রবাসীরাও কোনোদিন লোডশেডিং দেখেননি। দেশটিতে বিদ্যুৎ এতটা-ই আস্থাশীল ছিলো যে, কখনো বিদ্যুৎ যাবে এমন চিন্তা-ই কারো ছিলোনা। আর তাই বিদ্যুৎ চলে গেলে আইপিএস অথবা জেনারেটরের বিকল্প ও রাখা হয়নি।
আমাদের দেশে যেমন বিদ্যুতের একাধিক বিকল্প ব্যবস্থা আছে, কিন্তু ওমানের চিত্র একেবারেই আলাদা। ৫ সেপ্টেম্বর হঠাত করে ব্ল্যাক আউট হয়ে যায় ওমান। দেশটির প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাস্তাঘাট, দোকানপাট, ঘর বাড়ি, স্কুল কলেজ এমনকি দেশটির মাস্কাট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সেবা পর্যন্ত ব্যাহত হয়। বিদ্যুৎ না থাকায় সড়ক মহা সড়কের ট্র্যাফিক লাইট গুলো বন্ধ হয়ে যায়। আর এতে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় রাস্তায়। ট্র্যাফিক ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পরে। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ট্র্যাফিক পুলিশ এসে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করে। ব্যাহত হয় মোবাইল নেটওয়ার্ক পর্যন্ত। দেশটিতে এমন পরিস্থিতি ইতিপূর্বে হয়নি বলে জানিয়েছেন খোদ ওমানিরা।
হঠাত বিদ্যুৎ বিভ্রাটে চরম বিপাকে পড়েন দেশটির নাগরিকরা। এমনিতেই প্রচন্ড গরম, অপরদিকে নেই বিদ্যুৎ, এ যেন এক ভয়াবহ পরিস্থিতিতে রূপ ন্যায়। গতকালের এই ঘটনায় ৩৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দেয় ওমানে। পরিস্থিতি সামাল দিতে উপসাগরীয় বিদ্যুৎ আন্তঃসংযোগ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ১০০ মেগাওয়াট দিয়ে ওমানের পাশে দাঁড়ায় কুয়েত।
উল্লেখ্য: যেকোনো ধরণের জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ২০০১ সালে উপসাগরীয় দেশ সৌদি আরব, ওমান, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং বাহরাইন মিলে তৈরি করে উপসাগরীয় বিদ্যুৎ আন্তঃসংযোগ নেটওয়ার্ক। এটির কাজ হচ্ছে জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলায় যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ সরবরাহ করা।
৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় দুপুর ১-৪০ মিনিট থেকে এই সমস্যা দেখা দেয়। পরবর্তীতে সন্ধ্যার দিকে কিছুকিছু অঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হলেও ফের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর রাত ২টা থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তীব্র গরমে যাতে কেউ অসুস্থ না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখে ওমানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জরুরী পরিসেবার জন্য প্রস্তুত রাখা হয় অ্যাম্বুলেন্স। সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে জরুরী পরিসেবা টিম। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। হঠাত কী কারণে এমন পরিস্থিতি হলো তা এখনো জানা যায়নি। কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছে ওমান সরকার।
আরো পড়ুন:
আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছে ২০৪ কোটি ডলার
বাংলাদেশ বিমানে ফের সক্রিয় টিকিট সিন্ডিকেট
আবারো মিয়ানমারের ছোড়া ২টি গোলা পড়লো বান্দরবানে
যে কারণে ৭০০ বছরেও খোলা হয়নি প্রিয় নবীজির রওজার মূল দরজা
প্রবাসী নারীর কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলো ‘জিনের বাদশা’
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post