মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার ঘোষণার পরও কর্মী যাওয়া শুরু হয়নি। সব সিদ্ধান্তের পরও কর্মী যাওয়া নিয়ে চলছে টালবাহানা। অভিযোগ উঠেছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের বিরুদ্ধে। শ্রমবাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, তাদের অসহযোগিতায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
গত ২ জুন ঢাকায় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মাসে থেকেই দেশটিতে শ্রমিক পাঠানোর ঘোষণা দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ। কিন্তু সেই বৈঠকের পর প্রায় তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও পরিস্থিতির এখন পর্যন্ত কোনো উন্নতি হয়নি।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিএমইটির নিবন্ধন ছাড়া মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে চাহিদাপত্রে সত্যায়নের জটিলতা, কর্মীদের জন্য বাংলাদেশ অংশের খরচের পরিমাণ। কোন বিষয়ই চূড়ান্ত করতে পারেননি দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
২১ জুন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, এখনো মেডিকেল সেন্টার পরিদর্শনই করতে পারেনি এ বিষয়ে গঠিত কমিটি। ফলে, কর্মী পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়া থমকে আছে। ব্যাপারটিতে ক্ষুব্ধ মন্ত্রী নিজেই।
এছাড়া, কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রমকল্যাণ উইং থেকে বলা হচ্ছে ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে না পাওয়ায় চাহিদাপত্রে সত্যায়ন করতে পারছেন না তারা। যদিও এই দাবিকে অযৌক্তিক বলছেন রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা।
এদিকে, মালয়েশিয়ার নিয়োগদাতারা বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে আগ্রহী থাকলেও, নানা জটিলতার কারণে এখন বিকল্প দেশের দিকে ছুটছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, মন্ত্রণালয়ের এমন কর্মকাণ্ডের ফলে বাংলাদেশ কর্মী পাঠাতে প্রস্তুত নয়—মালয়েশিয়া সরকারের কাছে এমন বার্তা যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এতে বাংলাদেশের শ্রমবাজার অন্য দেশের হাতে যাওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকরা বলছেন, মালয়েশিয়া মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর বিবৃতির তথ্য অনুযায়ী গত ১৫ জুন পর্যন্ত দুই লাখ কর্মী নিয়োগের ব্যাপারে তার মন্ত্রণালয় ডিমান্ড লেটার ইস্যু করেছে। এর একটি বড় অংশ বাংলাদেশের পাওয়ার কথা হলেও আমাদের ঢিলেঢালা কর্মকাণ্ড এবং সিদ্ধান্তহীনতার কারণে পার্শ্ববর্তী দেশ নেপালসহ অন্য ১২টি ‘সোর্স কান্ট্রিতে’ চলে যাচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে সব কিছু চূড়ান্ত হওয়ার পরও নানা জটিলতা, সিদ্ধান্তহীনতা এবং আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতার কারণে মালয়েশিয়া শ্রমবাজারটি হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তাই দ্রুত দেশের স্বার্থে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনকে ডিমান্ড লেটার ও চুক্তিপত্র সত্যায়ন শুরু করতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
আরো পড়ুন:
তিন কোটি টাকার স্বর্ণসহ বিমানের কেবিন ক্রু আটক
ওমানে বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি, সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে খাদ্যপণ্যে
ঢাকা বিমানবন্দরে ছুঁড়ে ফেলা হয় লাগেজ
রাষ্ট্রদূত আবু জাফরের মায়ের মৃত্যুতে আমিরাত প্রেসক্লাবের শোক প্রকাশ
মাসে লক্ষাধিক বাংলাদেশি কর্মীকে ভিসা দিচ্ছে সৌদি আরব
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post