ওমান আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছে ওমান আবহাওয়া অধিদপ্তর। ওমানে গতকাল সর্বাধিক তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ওয়াদি আল মাওইল ও কুরাইয়তে ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রুস্তাক, সুর ও আল আমরাতে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বুধবার ওমানের আবহাওয়া অধিদপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, “ওমানের বেশিরভাগ এলাকায় তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।” এ ছাড়া আল বুরাইমি, আল দাহিরা, আল দাখিলিয়া, উত্তর আল শারকিয়াহ, দক্ষিণ আল শারকিয়াহ ও আল ওস্তা এলাকার উত্তর-পশ্চিম দিকে বাতাসের তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে বলেও জানানো হয়েছে।
দেশটিতে কর্মরত প্রবাসীদের এই সময়ে অতিরিক্ত গরমে অসুস্থতা থেকে রক্ষা পেতে যা করতে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা:
১. সূর্যের আলো এড়িয়ে চলা, বেলা ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত রোদের তীব্রতা বেশি থাকে। এ সময় জরুরি কাজ না থাকলে বাইরে বের না হওয়াটাই ভালো।
২. ছাতা ব্যবহার করা, বাইরে বের হলে অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করা, যাতে সরাসরি রোদের মধ্যে থাকতে না হয়। এ সময় চওড়া কিনারাযুক্ত টুপি, ক্যাপও ব্যবহার করা যেতে পারে।
৩. বেশি করে পানি পান করা, গরমে ঘাম হয়ে শরীর থেকে প্রচুর পরিষ্কার পানি বের হয়ে যায়, তখন ইলেট্রোলাইট ইমব্যালান্স তৈরি হতে পারে। এ কারণে এই সময়টাতে প্রচুর পানি পান করতে হবে। লবণ মিশিয়ে পানি পান করতে পারলে আরো ভালো। ফলের জুস খাওয়া শরীরের জন্য ভালো, তবে এ জাতীয় জুস খাওয়ার সময় দেখে নিতে হবে সেটি পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত পানি দিয়ে তৈরি কিনা। খোলা, পথের পাশের দুষিত পানি বা সরবত এড়িয়ে চলতে হবে।
৪. সূতির কাপড় পরতে হবে, গরমের এই সময়টায় জিন্স বা মোটা কাপড় না পরে সুতির নরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে। এ ধরণের কাপড়ে অতিরিক্ত ঘাম হবে না এবং শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সহায়তা করবে। গরমের সময় কালো বা গাঢ় রঙের কাপড় এগিয়ে সাদা বা হালকা রঙের কাপর পরিধান করা ভালো, কারণ হালকা কাপড় তাপ শোষণ করে কম।
৫. সঠিক জুতা নির্বাচন, গরমের সময় খোলামেলা জুতা পরা উচিত, যাতে পায়ে বাতাস চলাচল করতে পারে। কাপড় বা সিনথেটিকে বাদ দিয়ে চামড়ার জুতা হলে ভালো, কারণ এতে গরম কম লাগে। সম্ভব হলে মোজা এড়িয়ে চলা যেতে পারে।
৬. ভারী ও ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন, এ জাতীয় খাবার হজম করতে সময় বেশি লাগে। ফলে সেটি শরীরের ওপর বাড়তি চাপ ফেলে এবং শরীরের উষ্ণতা বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য সেটি আরও বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। খাবারের মেন্যু থেকে গরমের সময় তেলযুক্ত খাবার, মাংস, বিরিয়ানি, ফাস্টফুড ইত্যাদি বাদ দেয়া যেতে পারে। বরং শাকসবজি ও ফলমূল বেশি করে খাওয়া যেতে পারে।
৭. পুরনো বা বাসী খাবার না খাওয়া, গরমে খাবার-দাবার তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বাসী খাবার বা আগের দিন রান্না করা খাবার খাওয়ার আগে দেখে নিতে হবে যে, সেটি নষ্ট কিনা। এ জাতীয় খাবার খেলে ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানাসহ পেটের অসুখ হতে পারে।
৮. ঘরে পানি ভর্তি বালতি রাখা, এসি না থাকলেও সমস্যা নেই। ঘরের ভেতর ফ্যানের নীচে একটি পানি ভর্তি বালতি রাখুন, যা ঘরকে খানিকটা ঠাণ্ডা করে তুলবে।
৯. হিট স্ট্রোকের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা, প্রচণ্ড গরমে শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে তাপমাত্রা বেড়ে গেলে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারে। ফলে মাংসপেশি ব্যথা, দুর্বল লাগা ও প্রচণ্ড পিপাসা হওয়া, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, মাথাব্যথা, ঝিমঝিম করা, বমিভাব ইত্যাদি লক্ষণ দেখা গেলে প্রেশার পরীক্ষা করে দেখতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ওমানে জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের নতুন আইন
১০. প্রতিদিন অবশ্যই গোসল করা, গরমের সময় প্রতিদিন অবশ্যই গোসল করতে হবে, যা শরীর ঠাণ্ডা রাখবে। দিনে একাধিকবার হাত, মুখ, পায়ে পানি দিয়ে ধুতে পারলে ভালো। বাইরে বের হলে একটি রুমাল ভিজিয়ে সঙ্গে রাখতে হবে, যা দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর মুখ মুছে নেয়া যাবে।
https://www.youtube.com/watch?v=j8h_tu4CmCY
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post