বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে স্বরনকালের ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। একটি কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন চার শতাধিক মানুষ। চট্টগ্রামের কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ এবং হতাহতের এই ঘটনা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করছে রয়টার্স, এপি, বিবিসি, আলজাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান ও ডেইলি মেইল-সহ প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা ও সংবাদমাধ্যম।
শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ দুর্ঘটনায় ৫০ জনের অধিক নিহত ও চার শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেলসহ আশপাশের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী রয়েছেন ৫ জন। তবে তাদের নাম জানা যায়নি। প্রথমদিকে আগুনের ভয়াবহতা সম্পর্কে বুঝে উঠতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ও ডিপোর কর্মীরা। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কাছ থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছিলেন। ডিপোর কর্মীদের কেউ কেউ আগুনের দৃশ্য ভিডিও করছিলেন। রাত ১১টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হলে তাদের অনেকেই আগুনে তলিয়ে যান।
দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন। এখনো সেখানে একের পর এক কনটেইনার বিস্ফোরিত হচ্ছে। দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুনের লেলিহান শিখা। রোববার সকাল ১০টায় বিএম কনটেইনার ডিপোতে দেখা গেছে, আগুন নেভানোর কাজ করছেন চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও ফেনীর মোট ২৫টি ইউনিটের কর্মীরা।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বলছেন, কনটেইনারে রাসায়নিকের পরিচয় এখনো অজানা, নেভানো যাচ্ছে না আগুন। অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে মালিকপক্ষ কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করা এক ফায়ার ফাইটার বলেন, শনিবার রাত থেকে টানা কাজ করছি। কোনোভাবেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, প্রথমে পাইপ নিয়ে কনটেইনারের কাছে গিয়ে আমরা পানি ছিটানোর চেষ্টা করেছিলাম। তবে কাছ থেকে পানি দিতে গেলে বিস্ফোরণে ফায়ার ফাইটাররাও হতাহত হচ্ছেন। সে জন্য নিরাপদ দূরত্বে থেকে কাজ করছি। আমাদের কয়েকজন সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। তার মধ্যে ডিপোর মালিকপক্ষকে পাওয়া যাচ্ছে না। জানা যাচ্ছে না কোন কনটেইনারে কী রাসায়নিক আছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল নিশ্চিত করেছে, চট্টগ্রামের সব চিকিৎসকের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এ সময় বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদেরও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সরকারি হাসপাতালগুলোয় কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।
এদিকে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে পৃথক পৃথক শোকবার্তা জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ওমানে এক বাংলাদেশী প্রবাসী নিহত
এখন থেকে ওমান যেতে বাংলাদেশী শ্রমিকদের লাগবেনা ভিসা
অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাজ্য
অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে প্রথম দুই মুসলিম মন্ত্রী শপথ গ্রহণ করেছেন
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post