বিরোধীদের সঙ্গে কয়েক দশকের টানাপোড়েনের পর সংসদে প্রধানমন্ত্রীর ওপর অনাস্থা ভোটের আগে কুয়েত সরকার পদত্যাগ করেছে। মঙ্গলবার উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্যতম তেল উৎপাদনকারী এই দেশটির সরকার ক্রাউন প্রিন্সের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছে।
কুয়েতের ক্ষমতাসীন আল-সাবাহ পরিবারের সদস্য শেখ সাবাহ ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ বেশ কিছু অভিযোগে পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে বিরোধী আইনপ্রণেতারা।
দেশের বেশ কয়েকজন বিরোধী আইনপ্রণেতা প্রধানমন্ত্রীকে কোভিড-১৯ মহামারী এবং দুর্নীতি মোকাবেলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করতে চান। এবং বুধবার দেশটির সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সংসদে বিরোধীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল-খালিদ আল-সাবাহ নেতৃত্বাধীন সরকার তৃতীয়বারের মতো পদত্যাগ করল।
গত বছরের জানুয়ারিতে কুয়েতের তৎকালীন সরকারের পদত্যাগের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল-খালিদ আল-সাবাহ নেতৃত্বাধীন সরকার একই বছরের মার্চে গঠন করা হয়। সরকারের সঙ্গে বিরোধীদের এই বিরোধে সংসদে আইন প্রণয়নের কাজ থমকে যায়।
এছাড়া করোনাভাইরাস মহামারি এবং তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় দেশটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অর্থনীতির চাকা সচল করার লক্ষ্যে সংসদে বাজেট পাস এবং বিদেশি ঋণ নিতেও বাধার সম্মুখীন হয় সরকার।
কুয়েতে মন্ত্রিসভার সঙ্গে সংসদের অচলাবস্থা কয়েক দশক ধরে চলে আসছে। যা বিভিন্ন সময়ে দেশটির সরকারের রদবদল এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে সমাধান করা হয়েছে। তবে এতে বিনিয়োগ ও সংস্কার কাজ ব্যাপক বাধাগ্রস্ত হয়।
দেশটির সংসদের বিরোধী আইনপ্রণেতারা ২০১৯ সালের শেষের দিকে ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহকে দুর্নীতি, করোনা মহামারি, অর্থনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান। একই সঙ্গে গত বছরের মার্চে সংসদে পাসকৃত একটি প্রস্তাবের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
ওই প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীকে যে কোনো ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ ২০২২ সালের শেষের দিক পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়। শেখ সাবাহকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের সাধারণ ক্ষমার দাবি জানানো বিরোধীদের সঙ্গে সংসদের এই অচলাবস্থা কাটাতে সম্প্রতি দেশটির সরকার আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করে।
কুয়েতে রাজনৈতিক দলের অনুমতি না থাকলেও দেশটির সংসদের ক্ষমতা অন্যান্য উপসাগরীয় রাজতন্ত্রের তুলনায় অনেক বেশি। দেশটির সংসদের আইন পাস ও আটকে দেওয়ার ক্ষমতা, মন্ত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের ডাক দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
কুয়েতের রাজনৈতিক বিশ্লেষক নাসের আল-আবদালি বলেছেন, ক্ষমতাসীন পরিবারের কিছু সদস্য তাদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য সংসদকে ব্যবহার করেছে। কারণ তারা ক্ষমতার জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে। যে কারণে বৈরীতা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
রয়টার্সকে তিনি বলেন, কুয়েতের ক্ষমতাসীন পরিবারে প্রজন্মের লড়াই চলছে। আশা করা হচ্ছে সরকার পদত্যাগ করবে এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হবে।
আরো পড়ুন:
১৩ ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে শিক্ষকের মৃত্যুদণ্ড
ওমানে বাড়লো প্রবাসীদের ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ
ওমানে মর্মান্তিক পাহাড়ধসে আরো এক প্রবাসীর মরদেহ উদ্ধার
তুরস্কের হায়া সোফিয়ায় ৮৮ বছরে প্রথম তারাবি হতে চলেছে
হিজাব ইস্যুতে মেয়েদের টার্গেট করা হচ্ছে: মিস ইউনিভার্স
প্রবাসীদের মাঝে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া শুরু
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিলো ওমান
ওমানে পাথর ধ্বসের পর এবার মাটিধসে এক প্রবাসী নিহত
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post