গত কয়েকদিন ধরে ধূর্ণিঝড় শাহীনের প্রভাবে ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ওমানের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি দেখা দিয়েছে রাজধানী মাস্কাটসহ আশেপাশের প্রদেশগুলোতে। এরইমধ্যে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে নিয়ে আসতে বিভিন্ন প্রদেশে শুরু হয়েছে সংস্কার কার্যক্রম।
আজ সকালে মাস্কাট পৌরসভা জানিয়েছে, “দ্রুত ঘূর্ণিঝড় শাহীনের ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে প্রয়োজনীয় কাজ শুরু হয়েছে। জরুরী ব্যবস্থাপনার জন্য জাতীয় কমিটি ও মাস্কাট পৌরসভা এক যোগে কাজ করবে।
ঘূর্ণিঝড় শাহীনের কারণে প্রদেশটির বিভিন্ন এলাকার রাস্তা, পানির লাইন এবং কিছু প্রধান সড়কের পানি নিষ্কাশন ও উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে কল বা কোনো ধরণের অভিযোগ আসলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় শাহীনে দেশটির দক্ষিণ ও উত্তর বাতিনা প্রদেশে নিখোঁজ বা আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে রয়্যাল এয়ার ফোর্সের হেলিকপ্টার টিম।
আজ এক বিবৃতিতে রয়্যাল এয়ার ফোর্স জানিয়েছে, “দেশ জুড়ে আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় শাহীনে দেশটির অনেক এলাকায় ঘরবাড়ি বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেছে, বিভিন্ন এলাকার প্রধান সড়কগুলো আটকে পড়েছে।
যে কারণে অনেক নাগরিক ও প্রবাসী আশ্রয়কেন্দ্রে সময় মতো আসতে পারেনি। বিমান বাহিনীর সামরিক উপ-কমিটি তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী আটকে পড়া নাগরিক ও প্রবাসীদের খাদ্য সরবরাহ শুরু করেছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ে নিখোঁজ অনেক ওমানি নাগরিক ও প্রবাসীদের মরদেহ উদ্ধার করেছে আজ। দেশটির রুস্তাকের ওয়াদি আল সালেল থেকে এক ওমানি নাগরিকের মরদেহ উদ্ধার করেছে সিভিল ডিফেন্স এবং অ্যাম্বুলেন্সের উদ্ধারকারী দল।
গতরাতে মৃত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়ার পর তার গাড়ী ও ব্যক্তিকে উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে, সিভিল ডিফেন্স এবং অ্যাম্বুলেন্স অথরিটির আল দখিলিয়াহ প্রদেশে আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে। সিভিল ডিফেন্স এভিয়েশনের টাস্কফোর্স, পুলিশ এভিয়েশন এবং ওমানের রয়্যাল এয়ার ফোর্সের যৌথ সহযোগিতায় এই উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ওমান সরকারের পক্ষথেকে ঘোষণা না করা হলেও প্রবাস টাইমের কাছে যে পরিমাণ খবর এসেছে, তাতে ২০ জনের অধিক মৃত হয়েছে গত ৩ দিনে এবং নিখোঁজ রয়েছেন আরো অন্তত ২৫ জন।
উল্লেখ্য: এই ২৫ জন নিখোঁজ শুধুমাত্র বাংলাদেশী প্রবাসী। বাকি অন্যান্য দেশের নাগরিক এবং ওমানি নাগরিক সহ প্রায় শতাধিক মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ওমানে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় শাহীন নিয়ন্ত্রণে আসায় সুলতান কাবুস বন্দর ও সুইক বন্দরে জাহাজ প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ওমান। আসিয়াদ পোর্টস অ্যান্ড টার্মিনালের সিইও ড আহমেদ মোহাম্মদ আল আব্রি বলেন, “সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সুলতান কাবুস বন্দর (পিএসকিউ), সুইক বন্দর এবং শিনাস বন্দরের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ ছিল।
বর্তমানে ঝড় নিয়ন্ত্রণে আসায় আবার সকল বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ সকাল থেকে বন্দরে জাহাজ প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরো বলেন,” ঘূর্ণিঝড়ে সুইক বন্দরের ভবন, দেয়াল এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোনো ব্যক্তির প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।”
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post