মহামারী করোনা সংক্রমণ রোধে ওমানের ইতিহাসে আজ থেকে সবচেয়ে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হলেও মাত্র দেশটির সূর অঞ্চলকে এর আওতামুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কমিটি। ১৯-জুলাই কমিটির সর্বশেষ বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০ এবং ২১ জুলাই সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা নাগাদ অত্র অঞ্চল লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে।
এই সময়ে সূর অঞ্চলের খাদ্যের দোকান, রেস্টুরেন্ট, বিল্ডিং মেটারিয়ালস, ইলেকট্রিক দোকান এবং স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখতে পারবে বলে জানিয়েছে কমিটি। সেইসাথে অত্র অঞ্চলে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যারা কাজ করছেন, তাদের কাজের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য: ওমানে বর্তমান সময়ে ভারী বৃষ্টিপাতে সূর অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখে দিয়েছে। অত্র অঞ্চলে আজও হেলিকপ্টারের সাহায্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে ওমান সরকার। এমতাবস্থায় অত্র অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় সুপ্রিম কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানাগেছে সূত্রে।
এদিকে, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এ বছর ওমানে রাষ্ট্রীয়ভাবে কুরবানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে মানতে সবার প্রতি ফতোয়া জারি করেছেন দেশটির গ্র্যান্ড মুফতি। আর তাই এবছর ওমানের সকল পশু জবাইখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে কেউ চাইলে নিজের বাড়ির মধ্যে পশু কুরবানি দিতে পারবে, তবে বাড়ির বাহিরে বের হতে পারবেনা বলে জানাগেছে সূত্রে।
আরো পড়ুনঃ
- ওমানের অধিকাংশ প্রদেশে করোনায় মৃত শূন্যের কোঠায়
- ওমান ও বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত করোনা ভ্যাকসিনের তালিকা
- ভিসা নিয়ে সুখবর দিলো ওমান শ্রম মন্ত্রণালয়
ওমান সুপ্রিম কমিটির ঘোষণা অনুযায়ী আজ স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে শুরু হয়ে আগামী ২৪ জুলাই ভোর ৪টা নাগাদ চলবে এই কঠোর লকডাউন। এই সময় দোকানপাট, শপিংমলসহ সকল ধরনের যানবাহন চলাচল এবং মানুষের চলাচল সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এমনকি নির্দিষ্ট কিছু পেট্রোল পাম্প ব্যতীত সব পেট্রোল পাম্প পর্যন্ত খোলার অনুমতি পাবেনা বলে জানাগেছে সূত্রে। সেইসাথে এই চারদিন কোনো রেস্টুরেন্ট পর্যন্ত খোলা থাকবেনা বলে ওমান থেকে প্রবাস টাইমকে জানিয়েছেন একাধিক রেস্টুরেন্টের মালিক।
ওমান সুপ্রিম কমিটির নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এই সময়ে কোনো ব্যক্তি বিনা প্রয়োজনে বাড়ির বাহিরে বের হলেই মোটা অংকের জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে। তবে জরুরী প্রয়োজনীয় কিছু যানবাহন এই লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে। যার মধ্যে রয়েছে:-
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, জরুরি পরিষেবা, যেমন- কৃষি পণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন/বিক্রি, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, সরকারি-বেসরকারি গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), সিটি করপোরেশনের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত গাড়ি।
সড়কের বাতি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কার্যক্রম, ফার্মেসি ও ফার্মাসিউটিক্যালসসহ স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি ও যানবাহন। এ সকল সেক্টরে কর্মরত কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে যাতায়াত করতে পারবে। এ ছাড়াও কারো যদি ডাক্তারের কাছে অথবা হাঁসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে হাঁসপাতালে যাওয়ার অনুমতি মিলবে। একইসাথে এয়ারপোর্টগামী যাত্রীরা তাদের ট্রাভেল ডকুমেন্টস প্রমাণ সাপেক্ষে বিমানবন্দরে যাতায়াত করতে পারবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post