গাড়ি কেনার নামে প্রতারণার মাধ্যমে তিন কোটি টাকা মূল্যের চারটি গাড়ি আত্মসাৎতের অভিযোগে গাড়িগুলো উদ্ধারসহ পাঁচ প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান এসব তথ্য জানান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- জারাক আহমেদ (৩৮), আবুল কালাম রিফতিয়ার (৩৮), মো. জামির হোসেন (৩৬), মো. সজল আহম্মেদ (৩০) ও আব্দুর রহমান রুবেল (৫৬)। মঙ্গলবার রাতে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও বিভাগের ডিসি ইবনে মিজান আরও বলেন, ইমদাদুল হক খান ওরফে নওশাদ (৪২) একজন গাড়ি ব্যবসায়ী। তেজগাঁওয়ের ২৪০, আজিজ কোর্ট গ্রাউন্ড ফ্লোরে তার একটি গাড়ি বিক্রয়ের শো-রুম রয়েছে। এবি ড্রাইভ লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জারাক আহমেদ (৩৮) ও চেয়ারম্যান জামির হোসেন (৩৬) গত (২৬ নভেম্বর ২০২৪) হতে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিক্রয়ের উদ্দেশে চারটি গাড়ি ডেলিভারি চালান মূলে ভাটারার থানার নর্দ্দা প্রগতি স্মরণি এলাকায় এবি ড্রাইভ লি. এর শো-রুমে নিয়ে যায়।
গাড়ি চারটির সর্বমোট বাজার মূল্য তিন কোটি টাকা। পরবর্তী সময়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা গাড়িগুলো ফেরত দেবে না বলে জানায় এবং ভয়-ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। ইমদাদুল হক খান খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তারা গাড়িগুলো প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতের উদ্দেশে এবি ড্রাইভ লি. নর্দ্দা বাসস্যান্ড এলাকার শো-রুম থেকে অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছে।
এ ঘটনায় গত ৫ জানুয়ারি ইমদাদুল হক খানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জারাক আহমেদ ও মো. জামির হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়।। এই মামলার সূত্রে ধরে গত রাতে গুলশান লিংক রোড এলাকা হতে এবি ড্রাইভ লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জারাক আহমেদ (৩৮) কে আটক করে। পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও কাশিমপুর থানা এলাকা থেকে জামির হোসেনের সহযোগি আবুল কালাম রিফতিয়ার (৩৮)-কে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আবুল কালাম রিফতিয়ার কে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিসি ইবনে মিজান আরও জানান, তার বস মো. জামির হোসেন তাকে একটি টয়োটা এসকোয়্যার মাইক্রোবাস গাড়ি এবং একটি টয়োটা এক্সজিও প্রাইভেটকার তার জিম্মায় তার এক আত্মীয়ের বাসায় রাখতে বলে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে তাকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা মহানগর আফতাব নগর এলাকা হতে ওই গাড়ি দুইটি উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তাকে আরও দুইটি গাড়ির কথা জিজ্ঞাসাবাদ করলে, সে বলে অন্য গাড়ি দুইটির বিষয়ে সজল আহম্মেদ (৩০) অবগত রয়েছে। পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ি মো. সজল আহম্মেদ ও আব্দুর রহমান রুবেল কে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড ভূইগড় এলাকা হতে সাইদুর রহমান কাছ থেকে একটি টয়োটা ভেলফেয়ার জিপ গাড়ি ও একটি টয়োটা হেরিয়ার জিপ গাড়ি উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার করা এই চারটি গাড়ি গ্রেপ্তাররা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা স্বীকার করেছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post