করোনা ভাইরাসের ফুল ডোজ টিকা নেওয়া থাকলে আগামী ৯-জুলাই থেকে ওমান প্রবেশের অনুমতি পাবেন প্রবাসীরা। গতকাল (৬-জুলাই) ওমান সুপ্রিম কমিটির এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, যদি কারো একটি ডোজ টিকা নেওয়া থাকে, তাহলে উক্ত ব্যক্তি ওমানের সালালাহ অঞ্চলে প্রবেশের অনুমতি পাবে।
আর যদি কারো ফুল ডোজ টিকা নেওয়া থাকে, তাহলে বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকেই ওমান প্রবেশের অনুমতি পাবে। অর্থাৎ ওমান সুপ্রিম কমিটির গতকালের ঘোষণা অনুযায়ী, কোনো প্রবাসীর যদি ফুল ডোজ টিকা নেওয়া থাকে, তাহলে বাংলাদেশ থেকে পুনরায় ওমান প্রবেশের ক্ষেত্রে তার জন্য আর কোনো বাধা রইলোনা।
সুলতান কাবুস কুইজের ফলাফলঃ https://www.probashtime.net/sq/
বৈঠকে আরো বলা হয়, আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল আযহায় জনসমাগম কমাতে লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। পূর্বের রাত্রিকালীন লকডাউনের সময়সীমা রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত থাকলে নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৬ই জুলাই (শনিবার) থেকে ৩১শে জুলাই পর্যন্ত এই সময়সীমা বিকেল ৫টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত করা হয়েছে। লকডাউন চলাকালীন সময়ে জরুরী যানবাহন ব্যতীত সকল ধরনের যানবাহন ও দোকানপাট বন্ধ থাকবে। সেইসাথে রাস্তায় কোনো মানুষ চলাফেরাও করতে পারবেনা লকডাউন চলাকালীন সময়ে।
সুপ্রিম কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঈদের ৩ দিন অর্থাৎ ২০ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এই ৩ দিন সকল ধরনের দোকানপাট ও যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ থাকবে।
শুধুমাত্র জরুরী কাজে নিয়জিত যানবাহন এবং ফ্লাইটের যাত্রীরা এই লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে। এতে আরো বলা হয়েছে, দেশটির মুসান্দাম প্রদেশে করোনার রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ৬-জুলাই থেকে সকল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
একইসাথে করোনা সংক্রমণের হার কমিয়ে আনতে আগামী ৯ জুলাই থেকে ওমান প্রবেশে আরো ৯টি দেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। দেশগুলো হলো: সিঙ্গাপুর, তিউনিসিয়া, আর্জেন্টিনা, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ব্রুনেই, কলম্বিয়া, লিবিয়া, ইরাক।
এছাড়াও কোনো ব্যক্তি যদি ওমান প্রবেশের ১৪ দিনের মধ্যে উপরের কোনো একটি দেশে ভ্রমণ করে, তারাও ওমান প্রবেশ করার অনুমতি পাবেন না। এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে আগামী ৯ জুলাই স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে।
এদিকে বাংলাদেশ সরকারের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি যদি করোনা টিকার ফুল ডোজ গ্রহণ করে থাকেন, তাহলে তাকে দেশে ফেরার পর ১৪ দিন হোটেলে কোয়ারেন্টাইন করতে হবেনা। গত ৫-জুলাই বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন অথরিটি থেকে এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি করোনার একটি ডোজ অথবা টিকা গ্রহণ না করে থাকেন, তাহলে তাকে ১৪ দিনের জন্য বাধ্যতামূলক সরকার নির্ধারিত হোটেলে নিজ খরচে কোয়ারেন্টাইন করতে হবে।
তবে যেসব করোনার টিকা একটি ডোজেই ফুল ডোজ হিসেবে ধরা হয়, যেমন কেউ যদি জনসন এন্ড জনসনের একটি ডোজ টিকা নেয়, তাহলে তাকে আর কোনো টিকা নেওয়ার দরকার হবেনা। এমন এক ডোজ টিকা নিলেও দেশে এসে ১৪ দিনের হোটেল কোয়ারেন্টাইন করতে হবেনা। তবে তাকে ১৪ দিনের জন্য হোম কোয়ারেন্টাইন করতে হবে বাধ্যতামূলক।
বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ওমান থেকে দেশে ফিরলে ৩ দিনের কোয়ারেন্টিনের পরিবর্তে এখন থেকে বাধ্যতামূলক ১৪দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন করতে হবে। এতদিন ওমান থেকে দেশে ফিরলে ৩ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন আইন থাকলেও এখন থেকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন করতে হবে।
সোমবার (৫-জুলাই) বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ভারত, মঙ্গোলিয়া, নাম্বিয়া, নেপাল, পানামা, দক্ষিণ আফ্রিকা, তিউনেশিয়া ও বোতসোয়ানা এই ৮ টি দেশে যারা বসবাস করেন তারা ঐসব দেশ হতে যাত্রা শুরু করে সরাসরি বা অন্য কোন দেশে ট্রানজিট নিয়ে বাংলাদেশে আসতে পারবেন না।
তবে প্রবাসী বাংলাদেশি বা বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে যারা বিগত ১৫ দিনের মধ্যে ঐ ০৮ টি দেশের কোন দেশে ভিজিটে গিয়েছেন, তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে বাংলাদেশে ফিরতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশে পৌছার পর তাদেরকে সরকার অনুমোদিত কোন হোটেলে নিজ খরচে বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে৷
এতে আরো বলা হয়, ওমান, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, জর্জিয়া, কুয়েত, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইউকে ও উরুগুয়ে থেকে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশে আসা যাত্রীদের কোভিড ১৯ ভ্যাক্সিনের ডোজ কমপ্লিট করা থাকলে তাদেরকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে৷
তবে বাংলাদেশে অবতরণের পর যাত্রীর শরীরে কোভিডের লক্ষণ দেখা গেলে অধিকতর চেকআপের জন্য সরকার নির্ধারিত হাসপাতালে অথবা সরকার নির্ধারিত স্থানে বা হোটেলে আইসোলেশনে পাঠানো হবে।
আর যদি ভ্যাকসিন না নেওয়া থাকে অথবা ফুল ডোজ কমপ্লিট না করা থাকে, তাহলে উক্ত যাত্রীকে ১৪ দিনের জন্য সরকার নির্ধারিত হোটেলে নিজ খরচে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন করতে হবে।
১০ বছরের কম বয়সী শিশু ব্যতীত বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আগত সকল যাত্রীকে ফ্লাইটের ৭২ ঘন্টা বা তারও কম সময় বাকি থাকতে আরটি পিসিআর পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়ে নেগেটিভ রিপোর্ট সাথে নিয়ে আসতে হবে।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, বিদেশগামী প্রবাসী কর্মীদের কর্মস্থলে ফেরার সুবিধার্থে দেশ থেকে বিদেশে ফেরার ওপর কোন বিধি নিষেধ আরোপ করেনি বেবিচক। ফলে প্রবাসী কর্মীরা যেদেশে যাবেন, সেদেশের সাথে বাংলাদেশের কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলে প্রবাসীদের কর্মস্থলে ফিরতে বাংলাদেশের পক্ষথেকে কোনো বাঁধা নেই বলে জানিয়েছে বেবিচক।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post