দুর্ব্যবহার, বেতন-বোনাসে অনিয়ম এবং কর্মচারীদের প্রতি অবহেলার জেরে প্রতিশোধের নৃশংস পরিকল্পনা করেন আকাশ মন্ডল ইরফান। দীর্ঘদিনের ক্ষোভের কারণে তিনি সিদ্ধান্ত নেন জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়াকে হত্যা করার। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৮ ডিসেম্বর ঘুমের ওষুধ কিনে রাখেন তিনি।
ঘটনার দিন, ২২ ডিসেম্বর রাতে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সব কর্মচারীকে অচেতন করেন ইরফান। পরে গভীর রাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাস্টার গোলাম কিবরিয়াকে হত্যা করেন। ভয় ছিল, অন্যরা টের পেলে তাকে বাধা দিতে পারে। এ কারণে একে একে আরও ছয়জনকে হত্যা করেন।
এই ভয়াবহ ঘটনায় বেঁচে যান জাহাজের সুকানি জুয়েল, যার অবস্থা গুরুতর হলেও তিনি পুলিশকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন।
র্যাব-১১ এর মেজর সাকিব হোসেন বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) কুমিল্লায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ইরফান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
তিনি জানান, মাস্টারের প্রতি ক্ষোভ থেকেই প্রতিশোধ নিতে এই নৃশংস কাজ করেন। হত্যার পর ইরফান নিজেই জাহাজ চালিয়ে মাঝিরচরে নিয়ে যান এবং পরে ট্রলারে করে পালিয়ে বাগেরহাটে আত্মগোপন করেন।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে ইরফানকে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। মামলায় জাহাজের মালিক মাহবুব মুর্শেদ অজ্ঞাতনামা ডাকাতদের আসামি করে অভিযোগ দায়ের করেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, গ্রিজার সজিবুল ইসলাম, লস্কর মাজেদুল ইসলাম, শেখ সবুজ, সালাউদ্দিন, আমিনুর মুন্সী এবং বাবুর্চি রানা কাজী।
জাহাজ থেকে উদ্ধার করা হয় একটি রক্তাক্ত চাইনিজ কুঠার, একটি ফোল্ডিং চাকু, মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, এবং অন্যান্য সরঞ্জাম। আহত সুকানি জুয়েল বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চাঁদপুর জেলা প্রশাসন নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post