ওমানে বর্তমান করোনা পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক এবং ভীতিকর অবস্থায় রয়েছে। স্বাস্থ্যখাত প্রায় ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম। এমতাবস্থায় গোটা দেশে জরুরী ব্যবহারের জন্য আরো দুইটি করোনা ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে ওমান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নতুন অনুমোদিত ভ্যাকসিনের মধ্যে রয়েছে চীন ও রাশিয়ার তৈরি করোনা ভ্যাকসিন।
বৃহস্পতিবার (২৫-জুন) ওমান সুপ্রিম কমিটির এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান ওমান সুপ্রিম কমিটির সদস্য বদর সাইফ আল রাওয়াহী। বর্তমানে দেশটিতে অনুমোদিত টিকার মধ্যে রয়েছে, ফাইজার-বায়োনটেক, অক্সফোর্ড / অ্যাস্ট্রাজেনেকা, স্পুটনিক-ভি ও সিনোভ্যাকের তৈরি করোনা ভ্যাকসিন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, “ওমানে প্রতিদিন ৪০ হাজার নাগরিককে ভ্যাকসিন প্রদান করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশের সকল নাগরিককে ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে। ইতিমধ্যেই গর্ভবতী মহিলাদের ভ্যাকসিন প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গর্ভ ধারণের চতুর্থ মাস থেকে এই টিকা গ্রহণ করতে পারবে ওমানের নারীরা।”
এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে গোটা ওমানে কারফিউ জারীর কোনো সম্ভাবনা নাই বলে জানিয়েছেন ওমানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আহমেদ মোহাম্মাদ আল সাঈদি। তবে আগামীতে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলে কারফিউ সহ এয়ারপোর্ট পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে এমন কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কমিটি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এয়ারপোর্ট বন্ধের ব্যাপারে বলেন, “ওমানে করোনা পরিস্থিতি ভীতিকর হলেও আপাতত এয়ারপোর্ট বন্ধের কোনো পরিকল্পনা নেই।” মন্ত্রী আরো বলেন, ইতিপূর্বে ভ্যাকসিন গ্রহণে মানুষের অনীহার ফলে বর্তমান সময়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে।
ভ্যাকসিন নিয়ে কোনো ধরনের গুজবে কান না দিতে সবাইকে অনুরোধ জানান তিনি। বৈঠকে ওমানে টিকার বিরুদ্ধে গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের ও হুশিয়ারি দেন আল সাঈদি।
মন্ত্রী বলেন, “আমি ওমানে পুরোপুরি কারফিউ জারী করা হবেনা, এমন কথা বলবোনা। এটি নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির উপর। এ সময় দেশটির যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সুপ্রিম কমিটির সদস্য বলেন, ওমান ও ভারতের সাথে শুধুমাত্র ফ্লাইট চালু রয়েছে ভারত থেকে ওমানি নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে। একইসাথে স্বাস্থ্যকর্মী ও পণ্য পরিবহনের জন্য এবং ওমান থেকে ভারতীয় নাগরিকদের তাদের দেশে ফেরত পৌঁছানোর সুবিধার্থে সীমাবদ্ধ।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানানো হয়, আগামী জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর অবধি ওমানে নতুন করে আরো ৩২ লাখ ডোজ করোনা ভ্যাকসিন আসবে। আগামী আগস্ট মাসের আগেই ভ্যাকসিন প্রয়োগের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কাজ করছে ওমান।
দেশটিতে করোনার নতুন ধরন সংক্রমণের হার প্রায় ৮০ শতাংশ বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন ওমান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রোগ নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের মহাপরিচালক ডাঃ সাইফ সেলিম আল আব্রি। তিনি বলেন, ওমানে ভাইরাসের ডেল্টা রূপটি উদ্বেগজনক হারে পরিবর্তন ঘটেছে। এই পরিবর্তনের কারণে ভাইরাস দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। যা দেশের জন্য বিপজ্জনক।
আল আব্রি আরো বলেন, “দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে স্কুল এবং অন্যান্য সরকারী প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের জন্য ভ্যাকসিন গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ওমানে কোনো নাগরিক অথবা প্রবাসী, কাউকেই ভ্যাকসিন থেকে বাদ দেওয়া হবেনা। সবাইকে ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post