ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের যেকোনো চুক্তির অংশ হিসেবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি অপরিহার্য বলে জানিয়েছে সৌদি আরব।
এই অবস্থানে অনড় রয়েছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান, এমন তথ্য জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) আল আরাবিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
ব্লিঙ্কেন জানান, ইসরাইল-সৌদি আরব সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে তা মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতার চাবিকাঠি হবে এবং একই সঙ্গে ইসরাইলের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করবে।
তিনি আরও বলেন, “প্রথমে গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। এরপরে অঞ্চলটিতে স্থায়ী স্থিতিশীলতার দিকে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। এই প্রক্রিয়ার কেন্দ্রে থাকবে ইসরাইল ও সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ।”
ব্লিঙ্কেনের মতে, সৌদি আরব সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার একটি বিশ্বাসযোগ্য রূপরেখা চায়। রিয়াদ পূর্ব জেরুজালেমসহ ১৯৬৭ সালের সীমানার ওপর ভিত্তি করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের দাবি জানিয়ে আসছে।
সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে অগ্রগতি না হলে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়। গত মাসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রিন্সেস রিমা বিনতে বন্দর আল-সৌদ বলেন, “ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের সুনির্দিষ্ট পথ ছাড়া সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ অসম্ভব।”
গত এক বছরে ইসরাইলি হামলায় গাজায় ৪৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দেওয়ায় ইসরাইলকে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
ব্লিঙ্কেন বলেন, “গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা এখন অত্যন্ত জরুরি। এই প্রক্রিয়াকে উপেক্ষা করে কোনো চুক্তি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।”
যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন ইসরাইলি হামলাকে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। তবে আগামী জানুয়ারিতে ট্রাম্প প্রশাসনের মনোনীত মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভেন উইটফকে সৌদি আরবে পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।
প্রথম মেয়াদে আব্রাহাম অ্যাকর্ডস চুক্তির মাধ্যমে ইসরাইলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো ও সুদানের সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ধারণা করা হচ্ছে, এবার দ্বিতীয় মেয়াদে সৌদি আরবের সঙ্গে একই রকম চুক্তি বাস্তবায়ন করতে তিনি উদ্যোগী হবেন।
সৌদি আরব যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার শর্ত শিথিল করে, তবে মুসলিম বিশ্বে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সৌদি আরব এই বিষয়টি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করছে।
আরও দেখুনঃ
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post