বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের মংডু শহর দখল করার পর, সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি রোহিঙ্গা যোদ্ধাসহ মিয়ানমার সরকারের শতাধিক সেনাকে আটক করেছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর কুখ্যাত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনও।
আরাকান আর্মি (এএ) বুধবার এক ঘোষণায় জানায়, তারা মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের মংডু শহরের শেষ জান্তা ঘাঁটি দখল করেছে এবং এতে শত শত সরকারি সেনাকে বন্দি করেছে।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে মংডু শহরের দখল আরাকান আর্মির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন, কারণ এর ফলে প্রায় ২৭০ কিলোমিটার সীমান্ত পুরোপুরি তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। একাধিক মাসব্যাপী যুদ্ধের পর, গত রোববার সকালে তারা মংডুর বাইরের বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নম্বর ৫ দখল করে নেয়।
এই ঘাঁটি ছিল নিরাপত্তা বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র, যেখানে আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ), রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) এবং আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ)-এর সদস্যরা কাজ করতেন।
আরাকান আর্মি জানায়, জান্তা বাহিনীর বিমান হামলার মধ্যে তারা ৫৫ দিনের লড়াইয়ের পর এ ঘাঁটি দখল করতে সক্ষম হয়। এই সংঘর্ষে ৪৫০ জনেরও বেশি সরকারি সেনা নিহত হয়েছে, এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে।
ঘাঁটিটি দখলের পর, সরকারি সেনা এবং তাদের সঙ্গে থাকা রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা পালিয়ে যায়। পালানোর আগে, ঘাঁটিতে আটকে থাকা সেনারা একটি ভিডিও পোস্ট করে, যেখানে তারা জান্তা নেতার কাছে তাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার আবেদন জানায়।
ভিডিওতে তারা জানান, তারা তিন মাস ধরে ঘাঁটিতে আটকে রয়েছেন, তবে তাদের সরিয়ে নেওয়ার কোনও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুন তাদের পরিত্যাগ করেছেন।
মিয়ানমারে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুন জান্তার পক্ষ থেকে বিক্ষোভ দমন ও রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগে কুখ্যাত। ইরাবতী জানিয়েছে, আরাকান আর্মি থুরেইন তুনসহ বন্দি সেনাদের ছবি এবং জব্দকৃত অস্ত্রের ছবি প্রকাশ করেছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post