ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা রাজনৈতিক মন্তব্যের জন্য ব্যক্তিগত যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছেন এবং ভারত সরকার তাকে কোনো বিশেষ প্ল্যাটফর্ম বা সুবিধা দেয়নি, যার মাধ্যমে তিনি ভারতীয় ভূখণ্ডে বসে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন। ভারতের দীর্ঘদিনের নীতি হলো, তৃতীয় কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা।
সম্প্রতি ঢাকা সফর শেষে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে ব্রিফ করেন বিক্রম মিশ্রি। সেখানে তিনি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ব্রিফিংয়ে বিক্রম মিশ্রি বলেন, শেখ হাসিনার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনাকে ভারত সমর্থন করে না। এটি দুই দেশের সম্পর্কের মাঝে একটি ক্ষুদ্র প্রতিবন্ধক হিসেবে অবস্থান করছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা সরকারের সঙ্গে সীমাবদ্ধ নয়। এ সম্পর্কের ভিত্তি বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ এবং উভয় দেশের পারস্পরিক উন্নয়নের প্রতি দায়বদ্ধতায় স্থাপিত।
ভারতের নয়াদিল্লিতে অবস্থিত সংসদ ভবনের অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ে সম্প্রতি এক বিশেষ ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দেশটির ২১-২২ জন সংসদ সদস্য। ব্রিফিংটি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং সফরের উপর আলোকপাত করে।
বৈঠকের সময় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রকে সংসদ সদস্যরা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানের মর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন করেন। সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নে সচিবকে জবাব দিতে হয়, যা ব্রিফিংকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
ব্রিফিং শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা এবং সংসদের পররাষ্ট্রবিষয়ক স্থায়ী কমিটির প্রধান শশী থারুর। তিনি জানান, ব্রিফিংয়ের সময় বাংলাদেশ সফর থেকে ফেরা পররাষ্ট্র সচিব বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বিষয়ে আমাদের একটি অত্যন্ত সুচিন্তিত ও বিস্তারিত ব্রিফিং হয়েছে। তবে এটি একটি সংসদীয় কমিটির আনুষ্ঠানিক আলোচনা, যার জন্য একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। আপাতত এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়।”
শশী থারুর আরও উল্লেখ করেন যে, এ ধরনের বিষয়গুলোতে সংসদীয় কমিটি নিয়ম অনুযায়ী রিপোর্ট প্রস্তুত করে এবং আলোচনাকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
এই বৈঠক ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের গুরুত্বকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে, যা ভবিষ্যতে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করতে ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post