ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রতিক সময়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ঘিরে দেওয়া বক্তব্য থেকে সরে এসেছেন। ভারতের পক্ষ থেকে বিষয়টি সমর্থন না করার স্পষ্ট বার্তা পৌঁছানোর পর হাসিনার অবস্থানে এই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার-এর অনলাইনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে বসে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে মন্তব্যকে ভালোভাবে নিচ্ছে না ভারত। এ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্র বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে আলোচনায় তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে শেখ হাসিনা একটি লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করেন, যা তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন। তবে, এই বিবৃতিতে তিনি সরাসরি ড. মুহাম্মদ ইউনূস বা অন্তর্বর্তী সরকারের নাম উল্লেখ করেননি।
হাসিনা তার বিবৃতিতে বলেন, “দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারকে হটিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে।”
আরও


তিনি আরও অভিযোগ করেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অবমাননা করে ১৯৭১-এর পরাজিত শক্তি ও জামায়াতে ইসলামীর পুনর্বাসন চলছে। হাসিনা বাংলাদেশে “গভীর সংকটময়” পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার কথা উল্লেখ করে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ভারতের পক্ষ থেকে পরিস্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, শেখ হাসিনার বক্তব্য তাদের সমর্থন পায়নি। সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্র ঢাকা সফর করেন এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি জানান, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারত হস্তক্ষেপ করতে চায় না এবং ভারতে অবস্থান করে শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যও তারা সমর্থন করছে না।
গত আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর থেকেই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। বিশেষত শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্য এবং ভারতীয় সরকারের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ার ফলে হাসিনার সুর পাল্টানোর বিষয়টি রাজনৈতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট এবং আঞ্চলিক কূটনৈতিক পরিবেশের এই নতুন সমীকরণ ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করছে।








