ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সশস্ত্র হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ফের উত্তেজনা বেড়েছে। এই ঘটনার পর ভারত আটারি সীমান্ত বন্ধসহ কূটনৈতিক কর্মী সংখ্যা হ্রাস, ভিসা নিষেধাজ্ঞা এবং ছয় দশকের পুরনো সিন্ধু পানি চুক্তির বাস্তবায়ন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও তাদের আকাশসীমা ও ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিতের ঘোষণা দেয়।
পাকিস্তান জানায়, সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের ভারতীয় সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে এবং এর কোনো পরিবর্তন যুদ্ধ ঘোষণার সামিল হবে। ইসলামাবাদ সিমলা চুক্তিসহ সব দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্থগিতের কথাও বিবেচনা করছে। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে মোট ৪০টি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি রয়েছে, যার মধ্যে বাণিজ্য, পারমাণবিক নিরাপত্তা, পানি বণ্টন, ভিসা প্রদান ও সীমান্ত নিরাপত্তা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি রয়েছে।
১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি দুই দেশের মধ্যে বিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে নিষ্পত্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা নিষিদ্ধকরণ (১৯৮৮), সামরিক গতিবিধি সম্পর্কে আগাম বার্তা (১৯৯১) এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়ে অগ্রিম জানানোর (২০০৫) মতো গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিও উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে।
আরও পড়ুন
লাহোর ঘোষণাপত্র (১৯৯৯) দুই দেশের শান্তি ও পারমাণবিক নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গৃহীত এক ঐতিহাসিক উদ্যোগ। অন্যদিকে, ধর্মীয় স্থান ভ্রমণ সংক্রান্ত চুক্তি (১৯৭৪) ও নেহেরু-লিয়াকত চুক্তি (১৯৫০) সংখ্যালঘুদের অধিকার ও ধর্মীয় ভ্রমণকে সহজ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি চুক্তি আজও দুই দেশের পানি বণ্টনের ভিত্তি। তবে সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে চুক্তিটি ঝুঁকিতে পড়েছে। নতুন করে উত্তপ্ত এই পরিস্থিতিতে ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেয়, তা এখন আন্তর্জাতিক মহলের নজরে রয়েছে।