চট্টগ্রামে অন্তত ১০ কিলোমিটার সড়কে সাড়ে ৩ ঘণ্টা ধরে মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা নগরের ওয়াসা মোড়ে একটি পুলিশ বক্স ভাঙচুর ও সাঁজোয়া যানে ঢিল ছুড়েন। একই এলাকায় ছাত্রলীগের একটি পক্ষ অবস্থান নিয়েছিল।
পরে শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় তারা বাগমনিরাম গলির দিকে আশ্রয় নেন। সবশেষ বিকেল ৫টার দিকে শিক্ষার্থীদের মিছিলটি বহদ্দারহাট মোড়ে অবস্থান নেয়।
শিক্ষার্থীদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে নগরের কোতোয়ালি থানার ঐতিহাসিক আন্দরকিল্লা জামে মসজিদের ফটক থেকে শুরু হয়।
কর্মসূচি উপলক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা আগে মসজিদে এসে জুমার নামাজ আদায় করে। নামাজে খতিব নির্যাতন-নিপীড়নকারীদের ওপর বদদোয়া করলে শিক্ষার্থীরা উচ্চস্বরে আমিন বলেন।
নামাজ শেষেই শিক্ষার্থীরা বের হন। প্রথমে শিক্ষার্থীদের পুলিশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিয়ে মিছিল শুরু করে দেন। প্রথমে মিছিলটি কোতোয়ালি হয়ে নিউমার্কেট মোড়ে অবস্থান নেয়।
সেখানে শিক্ষার্থীদের স্লোগানে আশেপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা প্রকম্পিত হয়। এরপর মিছিলটি টাইগারপাস এলাকা দিয়ে ওয়াসা মোড়ে পৌঁছে। সেখান পুলিশ থাকায় উত্তেজনা শুরু হয়। তবে শেষপর্যন্ত সংঘর্ষ হয়নি। পরে পুলিশের সাঁজোয়া যানে ঢিল ছুড়ে শিক্ষার্থীরা।
ধাওয়ায় এটি কিছুটা দূরে সরে গেলে শিক্ষার্থীরা ওয়াসা মোড়ে পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে। ওইসময় পাশে ছাত্রলীগ অবস্থান করছিল। শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিলে তারা পার্শ্ববর্তী বাগমনিরাম গলির ভেতরে পালিয়ে যান।
এরপর মিছিলটি জিইসি মোড়ের দিকে এগোতে থাকে। ওয়াসা মোড় থেকে কয়েকশো গজ দূরে সড়কের পাশেই অবস্থিত চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কার্যালয় এবং পুলিশ লাইন। শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে সেখানে প্রবেশের চেষ্টা করে।
তবে শিক্ষার্থীদেরই একটি পক্ষের বাধায় সেখানে ঢুকেনি তারা। এরপর মিছিলটি জিইসি, ২ নম্বর গেট, ষোলশহর রেলস্টেশন, মুরাদপুর ও শোলকবহর হয়ে বহদ্দারহাট অবস্থান নেয়।
আশফাত হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকার আমাদের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে। রাতে বাসায় বাসায় তল্লাশি চালিয়ে ছাত্র থাকলে গ্রেপ্তার করছে। কিন্তু তারা বলেছিল কোনো প্রকার হয়রানি করবে না। এইচএসসি পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পর্যন্ত গ্রেপ্তার করে হত্যা ও বিস্ফোরক মামলার আসামি করা হচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
গতকাল বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি ফেসবুক পোস্টে লেখেন, গণহত্যা ও গণগ্রেপ্তার, শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সারাদেশে মসজিদে জুমার নামাজ শেষে দোয়া-কবর জিয়ারত, মন্দির, গির্জাসহ সব প্রার্থনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন ও জুমার নামাজ শেষে ছাত্র জনতার গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, আইনজীবী, ডাক্তার, বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতিকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, আলেম-ওলামা, শ্রমিক, অভিভাবকসহ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যে, শুক্রবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘প্রার্থনা ও ছাত্র জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সফল করে তুলুন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post