গত ১৯ থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত ছয় দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৮ কোটি ডলার। কিন্তু গত জুন মাসে প্রতিদিন গড়ে ৮ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রবাসী আয়সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুলাই মাসের প্রথম ভাগে এক দিনে যে পরিমাণ প্রবাসী আয় এসেছিল, সর্বশেষ গত ছয় দিনে এসেছে তার সমপরিমাণ।
১৯ থেকে ২৪ জুলাই ছয় দিনে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ৭ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার। অথচ চলতি মাসের প্রথম ১৮ দিনে প্রতিদিন গড়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আর জুন মাসে গড়ে দৈনিক প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। সেই হিসাবে জুলাইয়ের এই ছয় দিনে প্রবাসী আয়ের পালে উল্টো হাওয়া লেগেছে।
গত ১৯ থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত অবশ্য ব্যাংকিং কার্যক্রম চলেছে মাত্র এক দিন। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা নিয়ন্ত্রণে ১৯ জুলাই শুক্রবার রাত থেকে কারফিউ জারি করে সরকার। এরপর মঙ্গলবার পর্যন্ত ব্যাংক বন্ধ ছিল। ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় ব্যাংকের অনলাইন লেনদেনও বন্ধ ছিল।
কয়েক দিন লেনদেন বন্ধের পর ২৪ জুলাই ব্যাংক চালু হয়। ওই দিন লেনদেন চলে বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা। ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ১৯ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই বৈধ পথে তথা ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে প্রবাসী আয় আসাও সম্ভব ছিল না। এ সময়ের মধ্যে যারা বিদেশ থেকে প্রবাসী আয় পাঠিয়েছেন, গত বুধবার ব্যাংক খোলার প্রথম দিনেই তা দেশের ব্যাংকে জমা হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু সেটি হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, যদি কেউ বিদেশ থেকে প্রবাসী আয় পাঠিয়ে থাকেন, ব্যাংকগুলো তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিতরণ করতে বাধ্য; কিন্তু সংশ্লিষ্ট দেশের প্রবাসী আয় প্রেরণকারী রেমিট্যান্স হাউসগুলো যদি এ আয় ধরে রাখে, তাতে তা দেশে আসতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১ থেকে ১৮ জুলাই প্রবাসী আয় এসেছিল ১২৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। আর চলতি বছরের ১ থেকে ১৮ জুলাই দেশে বৈধ পথে প্রবাসী আয় এসেছে ১৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার।
ফলে গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের জুলাইয়ের প্রথম ১৮ দিনে প্রবাসী আয়ে বড় উল্লম্ফন শুরু হয়েছিল। চলতি মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ১ থেকে ২৪ জুলাই দেশে বৈধ পথে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৫৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার। চলতি মাসের একই সময়ে এসেছে ১৫০ কোটি ডলার।
এর মধ্যে প্রথম ১৮ দিনে এসেছিল ১৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার। আর ১৯ থেকে ২৪ জুলাই ছয় দিনে এসেছে ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
এর আগে গত জুনে ২৫৪ কোটি ডলার আয় দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। জুনে দেশে যে পরিমাণ প্রবাসী আয় এসেছিল, তা একক কোনো মাসের হিসাবে গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সর্বশেষ ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২৫৯ কোটি ডলার প্রবাসী আয় এসেছিল।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post