রাজশাহীর বাগমারায় প্রবাসী হাবিবুর রহমান ও তার ভাই মাস্টার আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে আদালতের রায় অমান্য করে ভুয়া দলিলের মাধ্যমে এক ব্যবসায়ীর জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে।
এই ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ফিরোজুল ইসলাম রাজু স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
তবে অভিযোগ পাওয়ার পর ইউপি চেয়ারম্যান থানা পুলিশ ও গ্রামপুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। গোবিন্দপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের দামনাশ গ্রামের মৃত আব্দুল ছাত্তারের ছেলে দামনাশ দাখিল মাদরাসার সহকারি শিক্ষক আব্দুল লতিফ ও তার ভাই ইতালি প্রবাসী হাবিবুর রহমান একই গ্রামের আমির উদ্দিনের ছেলে ফিরোজুল ইসলাম রাজু ও শাহ জালাল রানার জমি অবৈধভাবে দখলের উদ্দেশ্যে একটি ভুয়া দলিল দাখিল করে আদালতে একটি মামলা করেন।
ওই দলিল সম্পাদনে ইংরেজি দুটি তারিখ ১২/১২/১৯৬৮ ও ৩১/০১/১৯৬৯ এবং বাংলা তারিখ ১৫/০৫/১৯৭৫ উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু বাংলা ১৫/০৫/১৯৭৫ তারিখ ছিল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন।
এছাড়া ওই দলিলে কম্পিউটারাইজড ডিজিটাল সিলমোহরে বাংলা ও ইংরেজিতে রেজিস্ট্রার বানান ভুলসহ বিভিন্ন ধরনের অসংগতি পাওয়া যায়। কিন্তু বাস্তবে ১৯৬৮ সালে পাকিস্তান আমলে কম্পিউটারাইজড ডিজিটাল সিলমোহর ছিল না।
এর ফলে দলিলটি জব্দ করে আদালতের বিচারক মারুফ আল্লাম মামলাটি খারিজ করে দেন। একইসঙ্গে প্রতারণার দায়ে মাস্টার আব্দুল লতিফকে পুলিশ আটক করে কারাগারে পাঠায়।
পরে বিতর্কিত ওই জমিতে তিনি বা তার কোনো ওয়ারিশ যাবে না মর্মে একটি অঙ্গীকার দিয়ে সম্প্রতি জামিন পান। কিন্তু জামিনে আসার পর তার প্রবাসী ভাই হাবিবুর রহমান, আবুল কাশেম, আব্দুল হাদী এবং ভাগিনা মান্দার বেলাল উদ্দিনসহ ১৫-১৬ জন জোর করে গত শনিবার রাস্তা করার নামে ইট বিছিয়ে ওই জমি আবারও দখলের চেষ্টা করে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শাহ জালাল রানা বলেন, আদালতে তাদের দলিল জাল প্রমাণিত হওয়ার পরও ক্ষমতার জোরে তারা রাস্তা করার নামে অবৈধভাবে আমাদের জমি দখল করতে যান।
এ সময় আমরা বাধা দিতে গেলে তারা দা, লাঠি ও হাসুয়া নিয়ে ধাওয়া করে। পরে আমরা প্রাণ ভয়ে যেখান থেকে সরে আসি।
এ বিষয়ে মাস্টার আব্দুল লতিফ জানান, তার এক ভাই বিদেশে থাকে এবং তাদের দুটি ট্রাক রয়েছে। এ কারণে ১৫ ফিট প্রশস্ত রাস্তার প্রয়োজন হওয়ায় তারা নিজ খরচে ওই জমিতে ইট বিছিয়ে রাস্তা তৈরির চেষ্টা করলে ইউপি চেয়ারম্যান ও পুলিশ এসে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন বলে তিনি স্বীকার করেন।
থানার ওসি অরবিন্দ সরকার বলেন, খবর পাওয়া মাত্র ঘটনাস্থলে গিয়ে বিতর্কিত জমিতে ইট বিছানোর কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি মিমাংসার জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post