ফেনীর দাগনভূঞা পৌরশহরের হাসপাতাল রোডের অভিরামপুর এলাকায় একটি ৫তলা ভবন দখল করতে নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
সম্প্রতি ভবনটির মালিক আবদুল গফুর ভূঞা মারা যাওয়ার পর ঘটনাটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। অভিযোগ রয়েছে- ক্যান্সার আক্রান্ত গফুর ভূঞা ঐদিনের ঘটনায় হামলার শিকার হন। এরপর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় এবং তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় গফুর ভূঞার ছেলে রিয়াদ হোসেন রাজু বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় রাজাপুর ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবদীন মামুনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে আমান উল্যাহপুর এলাকার নির্মল সাহার ছেলে দহন সাহা, রুহিনী সাহার ছেলে নির্মল সাহা ও চয়ন সাহা, জগতপুর এলাকার আবদুল ওহাবের ছেলে আইয়ুব আলী, কালা মিয়ার ছেলে ছেরাজুল হক প্রকাশ হকসাব ও রাজাপুর ইউনিয়নের আবদুল নবী গ্রামের খায়েজুল হকের ছেলে ইকবাল হোসেনের নাম উল্লেখ করা হয়।
আদালত সূত্র জানায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাসেল মিয়া আলোচিত এ মামলার তদন্তের জন্য লাশ উত্তোলনের আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) আদালতে শুনানি হয়।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়্যেদ মো. শাফায়েত তার আবেদন মঞ্জুর করে লাশ উত্তোলনের আদেশ দেন।
এর প্রেক্ষিতে লাশ উত্তোলন প্রক্রিয়ার জন্য নিয়মানুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন জানান ওসি (তদন্ত) রাসেল মিয়া।
জানা গেছে, দাগনভূঞা সদর ইউনিয়নের জগতপুর এলাকার কাতার প্রবাসী আবদুল গফুর ভূঞা প্রায় ১৫ বছর আগে পৌরশহরের হাসপাতাল রোডের পলাশ চন্দ্র সাহার কাছ থেকে ৬ শতক জায়গা কেনেন।
ঐ জায়গায় ২০১৩ সালে ৫তলা ভবন নির্মাণ করেন। ২০২৩ সালে কাতার থেকে দেশে ফেরেন গফুর ভূঞা। এরইমধ্যে পলাশ চন্দ্র সাহার ভাগ্নে সয়েল সাহা নিজেকে ঐ জায়গার মালিক দাবি করেন। তার কাছ থেকে জায়গাটির আমমোক্তারনামা নেন ইকবাল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শনিবার (১ জুন) ৪০-৫০ জন যুবক ভূঞা ম্যানশনে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা প্রথমে সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে।
এরপর সবকটি মিটার ভেঙে বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন ও পানির মোটর খুলে নিয়ে যায়। নিচতলার বাসার বাইরে দরজা আটকিয়ে দ্বিতীয় তলায় গফুর ভূঞার বাসায় হানা দেয়।
কিছু বুঝে উঠার আগেই গফুর ভূঞা, তার স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, পুত্রবধূ ও দেড় বছর বয়সী নাতনিকে বেদম মারধর করে। এ সময় আসবাবপত্র ভাঙচুর ও তাদের ব্যবহৃত সবকটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।
মালিকানা দাবি করে বাড়ি ছেড়ে দিতে বিভিন্ন সময় অব্যাহত হুমকি-ধামকির পর হামলা চালানো হয় ভূঞা ম্যানশনে। পৌরশহরের ঐ এলাকায় প্রকাশ্যে হামলা হলেও কেউ এগিয়ে আসার সাহস পাননি।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post