প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা আরও সহজীকরণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট দেশেই এর আবেদন যাচাই-বাছাই করে মুদ্রণ ও বিতরণে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে প্রবাসীরা এনআইডি নেওয়ার জন্য আবেদন করলে সেটির তথ্য স্থায়ী ঠিকানায় তদন্তের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে করা হয়।
কয়েক ধাপ পেরিয়ে সেই আবেদনে দেওয়ার তথ্যের সত্যতা মিললে এনআইডি মুদ্রণ করে তা সংশ্লিষ্ট দেশে বিতরণের জন্য দূতাবাসে পাঠানো হয়। সেখান থেকে আবেদনকারী তার এনআইডি গ্রহণ করেন। এই প্রক্রিয়া সময় সাপেক্ষ। তাই সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইসি সচিব শফিউল আজিম ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে এনআইডি মহাপরিচালকে লিখিত নির্দেশনাও দিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন ৪০টি দেশে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা চালুর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বর্তমানে সাতটি দেশে এনআইডি সেবা দিচ্ছে। প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার জন্য আবেদন প্রবাসেই যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে মুদ্রণের ব্যবস্থা করতে হবে। ভবিষ্যতে অবশিষ্ট দেশসমূহে এ কার্যক্রম শুরু করা হবে। এক্ষেত্রে প্রকল্পের মেয়াদ শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় এ কার্যক্রম গ্রহণ করার উদ্যোগ নেওয়ার জন্যও বলেছেন তিনি।
বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার হিসেবে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইতালি, কুয়েত, কাতার, যুক্তরাজ্য ও মালয়েশিয়ায় স্মার্টকার্ড বিতরণ উদ্বোধনও হয়েছে। পরবর্তীতে ওমান, বাহরাইন, জর্ডান, সিংগাপুর, লেবানন, লিবিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, মালদ্বীপে এনআইডি কার্যক্রম হাতে নেওয়ার কথা রয়েছে। এরপর অন্যান্য দেশেও হাতে নেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পেয়ে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৯ সালে প্রবাসে এনআইডি সরবরাহের উদ্যোগটি হাতে নেয়। এরপর ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনলাইনের ভোটার করে নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করে ইসি। এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসীদের মাঝে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। তার আগে একই বছর ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার অংশ হিসেবে অনলাইনে আবেদন নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এরপর সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর ও মালদ্বীপে থাকা বাংলাদেশিদের জন্যও এ সুযোগ চালু করা হয়।
সে সময় অনলাইনে আবেদন নিয়ে সেই আবেদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলা থেকে যাচাই করে সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্ট দেশে দূতাবাস থেকে এনআইডি সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল। এরপর করোনা মহামারির কারণে থমকে যায় দূতাবাসের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা।
গত ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর পদত্যাগ করে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। এর আগে তারা প্রবাসে এনআইডি কার্যক্রমকে ফের উজ্জীবিত করেন। এক্ষেত্রে আগের আবেদনগুলো পাশ কাটিয়ে নতুন করে কার্যক্রম শুরু করেন তারা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post