গত জুলাই আগস্টে ছাত্র জনতার বিপ্লবের পতন ঘটেছে আওয়ামী লীগ সরকারের। তারপর থেকে আত্বগোপনে চলে গেছেন সহযোগী সংগঠনসহ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। আবার অনেকে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। এবার ভারতে পালাতে গিয়ে আটক হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু। গত ২ নভেম্বর দুপুরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ তাকে আটক করেছে। কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজারের অনলাইনে এ খবর প্রচার করা হয়।
আনন্দবাজারের অনলাইন জানায়, পশ্চিমবঙ্গের মালদহের হবিবপুর ব্লকের টিকাপাড়া ও কেদারিপাড়ার বর্ডার আউটপোস্টের মাঝখান দিয়ে উন্মুক্ত সীমান্ত পথে ভারতে অনুপ্রবেশ করার সময় আটক হন ফয়সাল।
মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানান, ফয়সালকে জেরা করা হচ্ছে। পাশাপাশি তদন্ত চলছে। জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ফয়সাল ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সম্প্রতি নিষিদ্ধ হওয়া ছাত্রলীগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তিনি প্রায় দুই মাস দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। পরে প্রাণ বাঁচাতে ভারতে পালিয়ে যান। বর্তমানে রুনু হবিবপুর থানা পুলিশের কাছে বিচারকের নির্দেশে পাঁচদিনের জন্য রিমান্ডে আছেন।
ফয়সাল আহমেদ রুনুর বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটায়। তার বাবা আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল গফুর সরকার তিনবারের ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। ২০০৮ সালে নওহাটা পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। তার ছেলে ফয়সাল আহমেদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর থেকে জড়িয়ে পড়েন ক্যাম্পাসের ছাত্র রাজনীতিতে।
সবশেষ ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং দায়িত্বে ছিলেন ২০২৩ সাল পর্যন্ত। গত জুনে তিনি রাজশাহী জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পান।
গত ৫ আগস্ট ও তার পূর্ববর্তী সময়ে রুনু ও তার ছাত্র নেতাদের নিয়ে রাজশাহী সাহেব বাজার, পবা ও তালাইমারি এলাকায় প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে টহল দিতে দেখা গেছে। এ সময় বিভিন্ন স্থানে হামলার সময়ও তাকে দেখা গেছে। ৫ আগস্টের পর রুনুর নামে মামলা দায়ের করা হয়। তার নামে দুইটি হত্যা মামলা আছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু। শেষমেশ চেষ্টা করেন ভারতে অনুপ্রবেশের। তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। ধরা পড়েছেন সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিজিবির পক্ষ থেকে তাকে গ্রেফতারের কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
তবে নওগাঁর বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. সাদিকুর রহমান বলেন, রুনুকে গ্রেফতারের বিষয়ে আমরা ভারতীয় সিমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাছে জানতে চেয়েছি। তারা নিশ্চিত করলে তখন বিস্তারিত বলা যাবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post