মার্কিন নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার জয়ের ফলে দেশটিতে বসবাস করা অবৈধ অভিবাসীরা বড় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
শনিবার (০৯ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের পরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অবৈধ অভিবাসীরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। সাবেক এ প্রেসিডেন্ট পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় তার গণ নির্বাসনের প্রতিশ্রুতি অনিশ্চয়তা এবং এক ধরনের আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এবং পিউ রিসার্চ বিভাগের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে প্রায় ১১ মিলিয়ন বা এক কোটি দশ লাখের মতো অবৈধ অভিবাসী বসবাস করছেন। তবে ২০০৫ সাল থেকে এ সংখ্যা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে।
দেশটিতে বসবাস করা বলিভিয়ার বংশোদ্ভুত গ্যাব্রিয়েলা বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। বর্তমানে তিনি পূর্ব উপকূলে একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করছেন। তিনি বলেন, ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন অবস্থানের বিষয়ে তারা এখন আতঙ্কিত। আমাদের অধিকাংশ যারা এখানে আছেন তাদের সবারই একই অবস্থা। কারোর বৈধ কাগজপত্র নেই।
যুক্তরাষ্ট্রে ছোটবেলা থেকে বসবাস করে আসছেন ৩৮ বছর বয়সী আরমান্দো জিমেনেজ। তিনি বলেন, আমি ভাগ্যবান ছিলাম। তবে আমি এখন অচল অবস্থায় আছি। ট্রাম্প আমার সবকিছু কেড়ে নিতে পারেন।
এর আগে টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন নির্বাচনে জয় পাওয়া রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার যে বিধান এতদিন প্রচলিত তা তিনি বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দেশটির আগামীর ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের প্রচারাভিযানসংক্রান্ত ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, নতুন প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব পাওয়ার যে বিধান তা বাতিল করা হবে। এর পরিবর্তে যাদের পিতা বা মাতার কারোর নাগরিকত্ব অথবা দেশটিতে বসবাসের বৈধ অনুমোদন রয়েছে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে জন্ম নেওয়া কোনো শিশু দেশটির নাগরিকক্ত পেতে হলে তার পিতা কিংবা মাতার কোনো একজনের যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অথবা বসবাসের বৈধ অনুমোদন থাকতে হবে। দেশের কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে এ নির্দেশনা পাঠানো হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ২০ জানুয়ারি নবনির্বাচিত প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেবেন। ওই দিন থেকেই এ নির্দেশনা কার্যকর করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসনসংক্রান্ত আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্ত মার্কিন সংবিধানবিরোধী। ফলে ক্ষমতা গ্রহণের পর এমন সিদ্ধান্ত সত্যিই কার্যকর করা হলে তা সংবিধান লঙ্ঘনের মতো ঘটনা ঘটবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post