হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভেতরে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) একটি অফিস দখলে নিয়েছে এভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্স (এভসেক)। বিমানবন্দরে সরকারি দুই সংস্থার বিরোধের এমন ঘটনাকে নজিরবিহীন বলছেন কেউ কেউ। হঠাৎ করেই কেন এপিবিএনের অফিস দখল করা লাগলো তা নিয়ে চলছে নানান কানাঘুষা।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের পক্ষ থেকে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। জিডিটি করেছেন বিমানবন্দর আর্মড পুলিশে কর্মরত সহকারী পুলিশ সুপার জাকির হোসেন।
জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিমানবন্দর থানার ডিউটি অফিসার এসআই সোলাইমান কবির।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, ‘সকাল সোয়া ১০টার দিকে এভসেকে কর্মরত স্কোয়াড্রন লিডার তাসফিক তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে কল দিয়ে জানান, অ্যাপ্রোন এরিয়ার ৩৩ নম্বর গেটে আপনাদের (এপিবিএন) অফিস থেকে মালামাল সরিয়ে ৮ নম্বর হ্যাঙ্গার গেটে রাখা হয়েছে। আপনাদের পুলিশ পাঠিয়ে এগুলো নিয়ে যান। পরে তিনি এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পূর্বে না জানিয়ে কেন মালামালগুলো সরিয়ে অন্যত্র রাখলো— এমন প্রশ্নে এভসেকের ডেপুটি ডিরেক্টর অপারেশন সাইফুর রহমান জানান, বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম ও এভসেকের ডিরেক্টর উইং কমান্ডার জাহাঙ্গীরের নির্দেশে এগুলো সরানো হয়েছে।’
জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, পরে তথ্য নিয়ে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ওই অফিসের প্রবেশমুখে বাম পাশে দেয়ালে লেখা এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ, এয়ার সাইড কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল লেখা সাইনেবার্ডটি ভঙ্গুর অবস্থায় অফিসের ভেতরে রাখা হয়েছে। অফিসের ভেতরে থাকা সরকারি কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার, ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস, ২০১০ সাল থেকে রক্ষিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথিপত্র নির্দিষ্ট স্থানে পাওয়া যায়নি। অফিসের সিসি ক্যামেরাটি সাদা কাগজে মোড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায়। অফিসের সামনের এপিবিএনের লোগো সম্বলিত স্টিকার উৎপাটন করে বিএফ টাস্কফোর্স লেখা, একই সঙ্গে বিমানবাহিনী ও সিভিল এভিয়েশনের লোগো বসানো রয়েছে। সিসি ক্যামেরাটি ভারী কাগজে মোড়ানোর কারণে কী কী মালামাল ও গুরুত্বপূর্ণ কী কী নথি সরানো হয়েছে তা সিসি ক্যামেরা বিশ্লেষণে পরিপূর্ণভাবে নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।
বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা বলছেন, এমন ঘটনায় বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় যথেষ্ট সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে দেশের বৃহৎ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা চরম ঝুঁকিতে পড়বে।
বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, আমাদের না জানিয়ে তারা যে কাজটি করলো তা রীতিমতো দখলের সামিল।
এ বিষয়ে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম ও এভসেকের ডিরেক্টর জাহাঙ্গীর হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে পাওয়া যায়নি। এমনকি মোবাইলে এ সংক্রান্ত মেসেজ দিয়েও উত্তর মেলেনি।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post