ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড গাজায় টানা কয়েকদিনের ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মুসলিম দেশগুলোকে সংগঠিত করছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। বৃহস্পতিবার তিনি আফগান ও কিরগিজ প্রেসিডেন্টর সঙ্গে ফিলিস্তিনে সম্প্রতি ইসরাইলি হামলার বিষয়ে টেলিফোনে আলোচনা করেন। তুর্কি প্রেসিডেন্ট অফিসের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ইয়েনি শাফাক।
কিরগিজ প্রেসিডেন্ট সদর জাপারোভের সঙ্গে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ ছাড়া দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও আঞ্চলিক বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন। এক বিবৃতিতে বলা হয়, এরদোগান বলেছেন আল-আকসা মসজিদ, গাজা ও ফিলিস্তিনিদের হামলাকারী ইসরাইলকে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে উদ্যোগ নিয়েছে তার সঙ্গে তুরস্কের পাশাপাশি কিরগিজস্তানকে দেখতে চায়।
বঙ্গবন্ধু কুইজ প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ সঠিক উত্তরদাতা একশত জনের তালিকা দেখুন এই লিংকে
http://www.probashtime.net/quiz/
এ ছাড়া আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানির সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন এরদোগান। ফিলিস্তিনে চলমান ইসরাইলি হামলার বিষয়ে আলোচনা করেন। এ সময় ইসরাইলকে মোকাবেলা করতে আন্তর্জাতিকভাবে সম্মিলিত কাজ করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি আফগানিস্তানের যে কোনো জটিল পরিস্থিতিতে তুরস্ক পাশে রয়েছে বলে আশ্বস্ত করেন।
এর আগে ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন এরদোগান। এর আগে বুধবার আলেজেরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে আলোচনা করেছেন এরদোগান। এ সময় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও ইসরাইলের সাম্প্রতিক আগ্রাসনের বিষয়টি প্রাধান্য পায়।
ফিলিস্তিনের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাভলুত চাভাসুগ্লু ও ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেনটো মারসাদি। কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদলু এজেন্সি। খবরে বলা হয়, শুক্রবার ওই দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে ফিলিস্তিন ইস্যুতে আলোচনা হয়।
এদিকে ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বর হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান। তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি নিপীড়নের বিষয়টি সারা বিশ্ব এড়িয়ে গেলেও তুরস্ক চুপ থাকবে না। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় ক্ষুব্ধ এরদোগান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে শান্তিপূর্ণ রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলের হামলার ঘটনায় আমি ভারাক্রান্ত ও ক্ষুব্ধ। ফিলিস্তিনের শহরগুলোতে ইসরাইলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ও মানবতার সম্মান রক্ষার জন্য জেরুজালেমের পাশে দাড়ানো কর্তব্য, যোগ করেন এরদোগান।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, যারা চুপ করে থেকে অথবা প্রকাশ্যে ইসরাইলের রক্তপাতকে সমর্থন করে, জেনে রাখা উচিত এক দিন তাদের ফিরতে হবে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের কর্তব্য জেরেুজালেমে শান্তি ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিশ্চিত করা।
এদিকে জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি আচরণের কারণে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু।ফিলিস্তিনে ইসরাইলের বর্বর হামলার বিষয়ে বিবৃতি দিতে ব্যর্থ হওয়ায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেরও সমালোচনা করেছেন তিনি। খবর টিআরটি আরবির।
রোববার ফিলিস্তিন পরিস্থিতি নিয়ে ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের জরুরি ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নিয়ে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় কয়েকটি আরব দেশ ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করায় বিষয়টির সমালোচনা করেন তিনি।
মেভলুত কাভুসোগলু বলেন, বর্ণবাদী নীতি অনুসরণ করার কারণে ইসরাইলের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন হ্রাস পাচ্ছে বলে আমরা দেখছি, তবে এ সময়ে ইসরাইলের সঙ্গে কয়েকটি মুসলিম দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার কারণে আমরা প্রতিবাদ কতটুকু গুরুত্ব পাবে? ওআইসির বৈঠকে ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সব পদক্ষেপে নেতৃত্ব অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে তুরস্ক।
বৈঠক শেষে এক টুইট বার্তায় তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনের জন্য আমাদের ঐক্য এবং দৃঢ়তা দেখানোর সময় এসেছে। উম্মাহ আমাদের নেতৃত্বের জন্য অপেক্ষা করছে। প্রয়োজনীয় যেকোনো পদক্ষেপ নিতে তুরস্ক প্রস্তুত রয়েছে। ওআইসির নির্বাহী কমিটির জরুরি বৈঠকে ফিলিস্তিনে চলমান নৃশংসতার জন্য এককভাবে ইসরাইলকে দায়ী করা হয়েছে বলেও তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post