আল-আকসায় টানা তিনদিন ধরে নিরপরাধ ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। মঙ্গলবারও (১১ মে) একাধিকবার আক্রমণ চালিয়ে ২৮ জনকে হত্যা করেছে। এরপরই পাল্টা জবাব দেওয়া শুরু করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতার সপক্ষের সংগঠন হামাস।
ইসরাইলের অভ্যন্তরে দুই শতাধিকের বেশি রকেট হামলা চালিয়েছে হামাস। এতে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর তেল আবিবে একের পর এক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। হামাসের লাগাতার নিক্ষেপিত ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে ইসরাইলের আইরন ডোম।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, রকেট হামলার ঘটনায় ইসরায়েলের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বেন গুরিওন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিমানবন্দরটি তেল আবিবের পাশেই অবস্থিত। হামাসের বরাত দিয়ে ফিলিস্তিন ইনফরমেশন সেন্টার জানিয়েছেন, গাজা থেকে ইসরাইলের আশদোদ এবং আশকেলন শহরে হামাস ব্যাপকভাবে রকেট হামলা চালিয়েছে। মাত্র পাঁচ মিনিটে এই দুই শহরে ১৩৭টি রকেট হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরাইলের দুই শহরের বিরুদ্ধে এটি এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় হামলা বলে এক বিবৃতিতে দাবি করেছে হামাস। মঙ্গলবার একের পর এক বিস্ফোরণে শহরটিতে বেজেছে সাইরেন সতর্কতা। সাইরেনের শব্দে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ইসরাইলিদের পালাতে দেখা গেছে।
হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ কার্যত যুদ্ধে রূপ নিয়েছে। বুধবার (১২ মে) সেই যুদ্ধ চলছে টানা পঞ্চম দিনের মতো। সোমবারের মতো মঙ্গলবারও দিনভর লড়াই হয়েছে। একের পর এক বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। পাল্টা রকেট হামলা চালাচ্ছে হামাসও।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিমান হামলায় অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটিতে এখন পর্যন্ত ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ১০ জন শিশুও রয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলের দাবি, গত পাঁচদিনে অন্তত পাঁচ জন ইসরায়েলির নিহত হয়েছে। নিহত হয়েছে এক ভারতীয় নারীও।
রোববার রাতে প্রথম রকেট হামলা চালায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। জবাবে অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। মঙ্গলবার এই সংঘর্ষের মাত্রা আরও বাড়ে। হামাস বলছে, ইসরায়েলের রাজধানী লক্ষ্য করে অন্তত ১৩০টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, পার্শ্ববর্তী শহরগুলোতেও হামলা চালাচ্ছে হামাস।
ইসরায়েল জানিয়েছে, আয়রন ডোম ডিফেন্স সিস্টেমের সাহায্যে একের পর এক রকেট হামলা প্রতিরোধ করা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও আক্রমণ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। মঙ্গলবার রকেটের আঘাতে দুইজন নিহত হয়েছে। গাড়িতে রকেটের সরাসরি আঘাত লাগায় নিহত হয়েছে অন্য এক নারী। রকেট হামলায় আহত ৪০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়।
এদিকে হামাসের হামলার তীব্রতায় দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। অন্যদিকে, মঙ্গলবার রাতে রাজধানী তেল আবিব শহরে সাইরেন বাজিয়ে সকলকে ঘুম থেকে তোলা হয়। হামলা থেকে বাঁচাতে সাধারণ নাগরিকদের নিরাপদ ভূগর্ভস্থ বাংকারে পৌঁছে দেওয়া হয়।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post