পাসপোর্ট যেন সোনার হরিণ। আবেদনের ৫ থেকে ৬ মাস হয়ে গেলেও পাসপোর্ট পাচ্ছেন না এমন অভিযোগ অসংখ্য ওমান প্রবাসীদের। বর্তমানে ওমান প্রবাসীদের কাছে ‘সোনার হরিণ’ হয়ে উঠেছে পাসপোর্ট। সময়মতো পাসপোর্ট না পেয়ে সীমাহীন ভোগান্তিতে আছেন হাজারো বাংলাদেশি কর্মী।
পাসপোর্ট না পাওয়ায় ভিসা (ওয়ার্ক পারমিট) নবায়ন করতে পারছেন না অনেকেই। আর এতে করে প্রতিমাসে জরিমানা গুনতে হচ্ছে জরিমানা। আবার অনেকেই ব্যাংক কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নসহ নানা জরুরি কাজে ভোগান্তিতে পড়েছেন। এছাড়াও চিকিৎসা, শিক্ষা, বিভিন্ন পরিষেবা ও আইনি ঝামেলা এড়াতে রেসিডেন্ট কার্ডের প্রয়োজন অনেকগুন বেড়েছে করোনাকালে। কিন্তু পাসপোর্ট নবায়নের দীর্ঘসূত্রিতায় কোনো কিছুই করতে পারছেন না তারা।
এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় থাকা প্রবাসীদের কষ্টের সঙ্গে ক্ষোভ যেমন বাড়ছে, তেমনি ব্যাপক চাপে রয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস ও সার্ভিস কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা মানি এক্সচেঞ্জগুলো। এমন পরিস্থিতির পেছনে ঢাকা থেকে পাসপোর্ট সরবরাহের ধীর গতিকে দায়ী করা হলেও চলতি মাসেই সংকট কেটে যাবে, এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর।
পূর্বে ৪৫ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট পাওয়া গেলেও করোনাকালে এসে তা তিন থেকে ছয় মাসে মাসে গড়ায়। তবে এই সময়ে বাংলাদেশি দুটি মানি এক্সচেঞ্জকে আবেদন গ্রহণ ও পাসপোর্ট বিতরণের দায়িত্বে আনায় সেবা অনেকটা সহজ হয়। কিন্তু, গত নভেম্বরে হঠাৎ করেই পাসপোর্ট বিতরণে স্থবিরতার দেখা দেয় এবং ফেব্রুয়ারি-মার্চে তা চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
এক্সচেঞ্জ সূত্র বলছে, আগে প্রতিমাসে সাত থেকে আট হাজার, অনেক সময় ১০ হাজার পর্যন্ত পাসপোর্ট বিতরণ হতো। তা কমে হয়েছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০। অপ্রত্যাশিত এমন পাসপোর্ট “জট” লাগার কারণে চাপের মুখে আছেন এক্সচেঞ্জ হাউজ গুলোও। প্রতিনিয়ত প্রবাসীদের সাথে কৈফিয়ত দিতে হচ্ছে তাদের। সময় মতো পাসপোর্ট ডেলিভারি দিতে ব্যর্থ হওয়ায় পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের কাছে বিব্রতকর অবস্থার মুখোমুখি হতে হচ্ছে এক্সচেঞ্জ হাউজ দুটির।
এই পাসপোর্ট সমস্যা সমাধানে ওমানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোঃ মিজানুর রহমান চিঠি দিয়ে এবং ফোনে পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে তাগাদা দিয়ে জট খোলার ব্যবস্থা করেন। বর্তমানে পাসপোর্ট ডেলিভারির পরিমাণ বেড়ে জট খুলতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে দূতাবাস। এর মধ্যে ১০ হাজার পাসপোর্ট দূতাবাসে পৌঁছেছে। আরো প্রায় ২০ হাজার পাসপোর্ট ঢাকায় মুদ্রণ প্রক্রিয়ায় আছে। করোনা পরিস্থিতির অবনতিতে কোনো প্রতিবন্ধকতা না হলে চলতি মাসের মধ্যেই ওমানে পাসপোর্ট ডেলিভারি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে দূতাবাস।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post