ভালো নেই দেশের বহুল আলোচিত । দায়িত্বে থাকাকালীন একের পর এক দুঃসাহসিক অভিযান পরিচালনা করে সবসময়ই খবরের শিরোনামে ছিলেন তিনি। করোনাকালীন সময়েও তিনি তার কাজ থেকে পিছপা হননি। এবার সেই আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের আক্ষেপ ঝরল ফেসবুক স্ট্যাটাসে।
সোমবার (৮ মার্চ) রাত ১২টা ১০ মিনিটে নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের চাকরি জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘চাকরি জীবনে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী অন্যায়, অনিয়মের বিরুদ্ধে লড়েছেন তাদের বেশির ভাগই চাকরি জীবনে পদে পদে বঞ্চিত ও নিগৃহীত হয়েছেন। এ দেশে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়াটাই অন্যায়!’
এই প্রতিবেদন লেখার সময় (১০-মার্চ, দুপুর ২টা) পর্যন্ত তার সেই পোষ্টে রিয়েক্ট পড়েছে ৩০ হাজারের বেশি এবং মন্তব্য করেছেন সাড়ে ৩ হাজারের বেশি মানুষ। বৈশাখী টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার আশিক মাহুমুদ মন্তব্য করেছেন “ভাই, দেশটা বোধয় অন্যায়কারীদের। আপনাদের মত ভালো মানুষের হয়তো জায়গা হবে না…। তারপরও আপনার জন্য শুভ কামনা”
মাহবুব্র রহমান নামে একজন তার ভেরিফায়েড আইডি থেকে মন্তব্য করেছেন “ভাই এদেশে ভালো কাজে সহযোগিতার বদলে বিপদে ফেলা হয়। যারা খারাপ কাজ করে তাদের শত্রু শুধু পুলিশ। যারা ভালো কিছু করে তাদের পেছনে লেগে যায় পুরো দেশ।” সাড়ে তিন হাজার মন্তব্যের অধিকাংশই ছিলো দেশ নিয়ে হতাশাজনক! পোষ্টটি শেয়ার করেছেন প্রায় ৩ হাজার মানুষ।
এর আগে গত বছরের রমজান মাসে বেশ কয়েকটি ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে নিয়মিত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন সারোয়ার আলম। সর্বশেষ হাজী সেলিমপুত্র ইরফান সেলিমকে মদ্যপ অবস্থায় গ্রেফতার ছিল তার সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা। তবে তার সর্বশেষ অভিযানের পরই গত বছরের ০৯ অক্টোবর তাকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে বদলি করা হয়।
সারোয়ার আলম প্রথম আলোচনায় আসেন ২০১৪ সালে। ফার্মগেটে ওভার ব্রিজ বাদ দিয়ে যারা সড়কে রাস্তা পারাপার হচ্ছিলেন তাদের নামমাত্র জরিমানা করে সচেতন করেছিলেন তিনি। তার আলোচিত অভিযানের মধ্যে অন্যতম ছিল ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ফকিরাপুলে ক্যাসিনোতে অভিযান।
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাব, ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা সংসদে অভিযান চালান তিনি। এ সময় ১৪২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন। উদ্ধার করা হয় ক্যাসিনো থেকে উপার্জিত অবৈধ ২৪ লাখ ২৯ হাজার টাকা।
এরপর গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর নিকেতনে যুবলীগ নেতা জি কে শামীমের অফিসে অভিযানে যায় র্যাব। সেখানেও ছিলেন সারোয়ার আলম। অভিযানে তার কার্যালয়ে তল্লাশি করে অবৈধভাবে উপার্জিত নগদ এক কোটি ৮০ লাখ, ২০০ কোটি টাকার এফডিআর, বিদেশি ডলার, মদ ও অস্ত্র উদ্ধার করেন তিনি।
আরো পড়ুনঃ
ওমান রুটে বিমানের এ কি হাল!
বাংলাদেশে আসছেন ওমানের সুলতান!
বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে চান বেশি অভিবাসী
পাসপোর্ট নিয়ে চরম ভোগান্তিতে ওমান প্রবাসীরা
ফেসবুক প্রতারণা থেকে প্রবাসীদের সতর্ক থাকার আহ্বান
২০১৮ এবং ২০১৯ সালে হাসপাতালে অভিযান চালান সারোয়ার আলম। মেয়াদোত্তীর্ণ রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার ও অনুমোদনহীন ওষুধ বিক্রির অভিযোগে বেশ কয়েকটি বড় বড় হাসপাতালে অভিযান চালান তিনি। এর মধ্যে পান্থপথের বিআরবি হাসপাতাল, শমরিতা হাসপাতাল ও বাংলাদেশ স্পাইন হাসপাতালকে ১৮ লাখ টাকা জরিমানা করেন।
নানা অনিয়মের অভিযোগে চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালকেও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন তিনি। সারোয়ার আলমের এমন সাফল্যের জন্য ২০১৯ সালের ১২ মে তার মাকে ‘গর্বিণী মা’ পদক পরিয়ে দেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তার এই সাফল্য এবং খ্যাতি অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। আর সে কারণেই হয়তো ভালো নেই তিনি এমনই আভাস মিলছে তার সাম্প্রতিক ফেসবুক স্ট্যাটাসে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post