সম্প্রতি সাংবাদিক জুলকার নায়েন সামী তার টুইটার আইডিতে ছেড়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দফতর সম্পাদক ও মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভীর কথোপকথন। এই অডিও কথোপকথনটি ৫ আগস্টের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব-গোপন ড্রয়ার থেকে উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছেন সামি।
অডিওটি প্রকাশের ক্যাপশনে সামি লিখেছেন, ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন ত্যাগের পর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা একটি ড্রয়ারে কিছু সিডির সন্ধান পান। সব সিডিগুলো বিশ্লেষণ করে বোঝা যায় বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের স্পর্শকাতর ফোনালাপের এসব সিডি হাসিনা সম্ভবত রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবেই ব্যবহার করতেন এবং রাখতেন একেবারে নিজের জিম্মায়। তেমনি একটি সিডির কথোপকথন জনগুরুত্ব বিবেচনায় প্রকাশ করা হলো।
সেই ফোনালাপের চুম্বুকাংশ পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: আমি বহুবার সাভারে গেছি-গোপনে। পোলাপানগুলোর সঙ্গে বহুবার নানা জায়গায় বসে মিটিং করছি। এখানে তো- আমানুল্লাহ আমান তো ঢাকা-২ এ কুলাতে পারবে না। সে এখন সাভার দখল করার ধান্দায় আছে।
রুহুল কবির রিজভী: ওহ আচ্ছা- এইটা হচ্ছে টার্গেট। এবার বুঝতে পারছি।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: ঢাকা-৩ এও নমিনেশন দিলেও আমানের পাশ করা সম্ভব না।
রুহুল কবির রিজভী: ওহ, সেটা তো ওর কথাবার্তায় বোঝা যায়, খুব ডিফিক্যাল্ট।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: শোনেন- আমি বলি, আমান ১৩টা মার্ডার করছে ২০০১ সালের পরে। প্রত্যেকটা মার্ডারের সাথে ও জড়িত। এর মধ্যে ২টা আওয়ামী লীগের, বাকি ১১টা নিজেদের। এবং প্রত্যেকটা মার্ডারের অ্যাগেনেস্টে ১০ লাখ ২০ লাখ করে টাকা নিছে। ও আর উখিয়ার ছেলেটা- মোস্তাফিজ। এই দুজনে সিন্ডিকেট কইরা মার্ডারগুলো পুলিশ দিয়ে পুলিশ দিয়েই করাইছে।
রুহুল কবির রিজভী: আরে সর্বনাশ।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: পুলিশ খারাইয়া রইছে, পুলিশের অস্ত্র দিয়াই অর লোক মার্ডার করছে। আর এটা পত্রিকায় আইছে ক্রস ফায়ার।
রুহুল কবির রিজভী: ওওও…
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: এই যে টাইম প্যাট্টলে যে ছিল হাবিল- হেরে মারছে, আনোয়ার করে একটা ছেলেরে মারছে ২৫ লাখ টাকার বিনিময়ে। বাদশা করে একটা লোকরে মারছে একই ঘটনা। মঞ্জু মেম্বার কইরা আওয়ামী লীগের একটা পপুলার লোক, তারে মারছে। ভোট কি আমার এমনে গেছিনি, বোঝেন না আপনি?
রুহুল কবির রিজভী: ওওও…
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: মোট ১৩টা মার্ডার- একটা না।
রুহুল কবির রিজভী: আরে সর্বনাশ। এই জন্য সে এখন ওদিকে চলে যেতে চায় আরকি…
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: সে কেরানীগঞ্জে দুইটা সিএনজি পাম্প করছে। একটা মার্কেট করছে, আড়াই বিঘা জমির ওপর। ২৪৬টা দোকান। এককটা দোকান কম হলেও ৫০ লাখ টাকা দাম। ২৫০-৩০০ কোটি টাকার এই মার্কেটটা। টাকা যে কি ওর…
রুহুল কবির রিজভী: আরে বাপ রে বাপ।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: এই যে সেগুন বাগিচা এন্টি করাপশনের উত্তর দিকে যে ১৪তলা বিল্ডিংটা, পার ফ্লোরে ৬টা করে ফ্ল্যাট, সেই ব্লিডিংটা ওর। গুলশানে ৪টা বাড়ি।
রুহুল কবির রিজভী: ভাই- পেপারে যা উঠেছে, একেবারে মিথ্যা ওঠেনি।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: একদম না। বসুন্ধরা থেকে দুইটা বাড়ি দিয়েছে গুলশানে। আর নিজে নিয়েছে দুইটা।
রুহুল কবির রিজভী: ক্ষমতা আর বিএনপিকে এরা নিজের সম্পত্তি বানিয়েছেন। এজন্য..
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: ডিইউএসএস এ দুইটা বাড়ি। গুলশানে চারটা। বনানীতে একটা, হাওয়া ভবনের পাশে। শ্যামলিতে একটা। সেগুনবাগিচায় একটা।
রুহুল কবির রিজভী: আর গুলশান মোড়ের উপরেই তো তারা একটা ইয়ে করেছে, ওখানে তো আগে থেকেই তার পাঁচ কাঠা জমি।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: পাঁচ কাঠা ওই যে 91 এ (১৯৯১ সাল) নিছে। নিজের নামে একটা নিছে, শ্বশুরের নামে একটা নিছে। আর সাভারের যেটা জমি- ২৫০ বিঘা।
রুহুল কবির রিজভী: ওরে সর্বনাশ…
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়: ও তো জেল থেকে বাঁচবে না। দুর্নীতির মামলায় তো ওর শাস্তি না হয়ে উপায় নাই।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post