কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় শিক্ষার্থীদের হত্যা, হামলা, নির্যাতন ও গ্রেফতারের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ী করে নিজ কার্যালয় থেকে তার ছবি সরিয়ে ফেলেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শামীমা সুলতানা। সাম্প্রতিক এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার অর্জন ভূলুণ্ঠিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুরে অধ্যাপক শামীমা সুলতানার কার্যালয়ের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ছবিতে শামীমা সুলতানাকে চেয়ারে বসে থাকতে দেখা যায়। তার পেছনে দেয়ালের ওপরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দেখা গেলেও পাশে প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেখা যায়নি।
বিকাল ৫টার দিকে অধ্যাপক শামীমা সুলতানা ছবি সরিয়ে ফেলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রী তার বাহিনী দিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। হত্যা করা হয়েছে অবুঝ শিশু থেকে বয়স্কদের।
নারী শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা লাঞ্ছিত হয়েছেন। এরপরও বারবার তিনি মিথ্যাচার করেই যাচ্ছেন। তার নির্দেশেই নারকীয় হামলা, হত্যা, নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থী হত্যার মধ্য দিয়ে জাতিকে মেধাশূন্য করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
অধ্যাপক শামীমা সুলতানা বলেন, ‘তার (প্রধানমন্ত্রীর) জন্য এ মুহূর্তে ঘরে পর্যন্ত কেউ নিরাপদ নন। তার হাতে অসংখ্য শিক্ষার্থীর রক্ত লেগে আছে। যার জন্য বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান হুমকির মুখে পড়ে যায়, তার ছবি আমার কার্যালয়ে কীভাবে রাখি?
শিক্ষার্থীরা আমার সন্তানের মতো। যার হাত আমার সন্তানের রক্তে রঞ্জিত, তার ছবি আমার দেয়ালে রাখতে চাই না। আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রী তার কার্যকলাপের কারণে মানুষের হৃদয়ে আর নেই। তাই শুধু জাতির পিতার ছবি রেখেছি। শেখ হাসিনার ছবি সরিয়ে ফেলেছি।’
শামীমা সুলতানা আরও বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করছি। সেইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী যদি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেন, তাহলে আবারও সসম্মানে তার ছবি দেয়ালে টানিয়ে দেবো।’
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রীদের কার্যালয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদফতর, বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাস ও সব স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে সরকারপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতি টানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post