বিদেশ থেকে ফেরার সময় নিজের ব্যবহার করা দুটি মোবাইল ফোন সেটের সঙ্গে আনা যাবে নতুন একটি হ্যান্ডসেট; তবে পুরনোগুলো শুল্কবিহীন হলেও নতুনটির জন্য গুনতে হবে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকার শুল্ক।
নতুন কাস্টমস আইন অনুযায়ী ব্যাগেজ বিধিমালায় এমন বিধান কার্যকর করে একটির বেশি নতুন মোবাইল হ্যান্ডসেটও আনার সুযোগ রাখা হয়েছে।
তবে একাধিক হ্যান্ডসেটের শুল্ক নির্ধারণ হবে বাণিজ্যিক আমদানির বিধি অনুযায়ী। সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রে ‘বিধি ১০ ও অন্যান্য প্রচলিত বিধিবিধান’ কার্যকর হবে।
গত ৬ জুন সংসদে আগামী ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনের দিন থেকে কার্যকর হয়েছে কাস্টমস আইন, ২০২৩। সেদিন থেকেই এ নিয়ম মানতে হচ্ছে যাত্রীদের।
অপরদিকে ব্যাগেজ বিধিমালার প্রজ্ঞাপন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জারি করেছে গত ২৯ মে।
নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, ব্যবহার করা দুই ফোন শুল্কবিহীন হলেও নতুন একটি মোবাইল হ্যান্ডসেটের জন্য বন্দরে শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। এটি সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
- যাত্রীর সঙ্গে আনা নতুন একটি মোবাইল সেটের দাম ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হলে শুল্ক ৫ হাজার টাকা;
- ৩০ হাজারের বেশি কিন্তু ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত হলে শুল্ক ১০ হাজার টাকা;
- হ্যান্ডসেটের দাম ৬০ হাজার টাকার বেশি হলে শুল্ক দিতে হবে ২৫ হাজার টাকা;
- মোবাইল ফোন আনার বিষয়টি নির্দিষ্ট ফরমে ঘোষণা দিতে হবে যাত্রীকে;
- ঘোষণা দেওয়া ছাড়া মোবাইল ফোন ধরা পড়লে নতুন আইন অনুযায়ী তা বাজেয়াপ্ত করতে পারবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ;
- একের অধিক নতুন মোবাইল সেট আনলে সাধারণ আমদানির মত শুল্ক ও কর পরিশোধ করতে হবে;
নতুন কাস্টমস আইনের অধীনে এনবিআর ‘অপর্যটক যাত্রী ব্যাগেজ বিধিমালা, ২০২৪’ এর প্রজ্ঞাপন জারি করে ৫ নং ধারায় বলেছে, ‘‘এই বিধিতে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, একজন যাত্রী তফসিল-৩ এ উল্লিখিত পণ্যের প্রত্যেকটির একটি করিয়া পণ্য সকল প্রকার শুল্ক ও কর পরিশোধ ব্যতিরেকে এবং তফসিল-২ এ উল্লিখিত পণ্যের প্রত্যেকটির একটি করিয়া পণ্য উক্ত তফসিলে উল্লিখিত শুল্ক ও কর পরিশোধ সাপেক্ষে আমদানি করিতে পারিবেন।
mobile_phone_baggage_rules_new_customs_190624.pdf – Google Drive
‘‘তবে শর্ত থাকে যে, একজন যাত্রী সর্বোচ্চ দুটি ব্যবহৃত মোবাইল ফোন শুল্ক ও কর পরিশোধ ব্যতিরেকে আমদানি করিতে পারিবেন এবং তফসিল-২ অনুযায়ী শুল্ক ও কর পরিশোধ সাপেক্ষে, একটি নতুন মোবাইল ফোন আমদানি করিতে পারিবেন, তবে ইহার অতিরিক্ত আমদানিকৃত মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রে বিধি ১০ ও অন্যান্য প্রচলিত বিধিবিধান প্রযোজ্য হইবে।’’
এ বিধিমালার ২ নং ধারায় ‘যাত্রী’র সংজ্ঞা দেওয়া হয়।
সেখানে বলা হয়, ‘যাত্রী অর্থ বিদেশ হইতে আগত কোনো অপর্যটক যাত্রী-নন ট্যুারিস্ট)। আর ‘ব্যাগেজ’ বলতে বোঝাবে, ‘কোনো যাত্রী কর্তৃক আমদানিকৃত যুক্তিসংগত পরিমাণের খাদ্যদ্রব্য, পরিধেয়, গৃহস্থালি বা অন্যবিধ ব্যক্তিগত সামগ্রী, যাহার প্রতিটি আইটেমের ওজন ১৫ কেজির অধিক নহে।’’
মোবাইল ফোন আমদানির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে মোবাইল সেট আমদানিতে ৫৭ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক দিতে হয়। খুচরা যন্ত্রাংশ ও এক্সেসরিজ আমদানির শুল্ক আরও বেশি।
বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ আমদানিকারকদের সংগঠনের সভাপতি মইন উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘সেলুলার ফোনের খুচরা যন্ত্রাংশ ও এক্সেসরিজ আমদানিতে সর্বনিম্ন ১২৮ শতাংশ থেকে ১৩৭ শতাংশ পর্যন্ত কর দিতে হয়।’’
বাংলাদেশ মোবাইল ফোন আমদানিকারকদের সংগঠনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোবাইল ফোন শিল্পের বাজার ১৫ হাজার কোটি টাকার। সব ব্র্যান্ডের ফোন আমদানির পাশাপাশি ১১টি ব্র্যান্ডের হ্যান্ডসেট দেশে সংযোজন করা হচ্ছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post