ডেটিং অ্যাপে নিজের কাছের এক বান্ধবীকে বিক্রি করে ফায়দা তুলেছেন রাজধানী উত্তরার একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মোছা. সামিয়া।
নিজের ছবিতে যখন আর কাজ হচ্ছিল না, তখন মাহি নামের একটি অ্যাকাউন্টে খুলে বান্ধবীর ছবি ব্যবহার করে প্রতারণা করেন সামিয়া।
এভাবে ডেটিং অ্যাপের অ্যাকাউন্ট থেকে রুম ডেট করার নামে বহু মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।
গণমাধ্যমকে ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষার্থী জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে তিনি লক্ষ করছেন, বাসা থেকে বের হলেই আশপাশের কিছু মানুষ তার দিকে কৌতূহল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। তারপরও তিনি বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই নিচ্ছিলেন।
একদিন উত্তরায় রিকশায় যাচ্ছিলেন তিনি। রাস্তায় অপরিচিত এক ব্যক্তি তার নাম ধরে ডাকতে থাকেন। চিৎকার করে বলেন, এই মেয়ে কেন এমন করলে আমার সঙ্গে।
আমার কাছে রুম ডেটের কথা বলে অগ্রিম টাকা নিয়ে তারপর আমাকে ব্লক করে দিলে। সেই ব্যক্তির কথা শুনে অবাক হন ঐ শিক্ষার্থী।
ঘটনার কয়েকদিন পর তার পরিচিতরা তাকে ডেটিং অ্যাপস ট্যানট্যানের একটি আইডির স্ক্রিনশট পাঠায়। সেখানে মাহি নামের অ্যাকাউন্টে ব্যবহার করা হয়েছে তার ছবি।
সেই ডেটিং অ্যাপের অ্যাকাউন্ট থেকে রুম ডেট করার নামে বহু মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে লাখ লাখ টাকা। আর এসব কিছুই করেছে তারই কাছের এক বান্ধবী। সেই বান্ধবীর নাম মোছা. সামিয়া।
তিনি আরো জানান, সামিয়া এসব অ্যাপে নিজের ছবি ব্যবহার করে বহু মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। রুম ডেটের কথা বলে ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার।
এমনকি সুযোগ বুঝে লাখ টাকাও নিয়েছে কারো কারো কাছ থেকে। ভুয়া জন্মদিনের কথা বলে নিয়েছে দামি উপহার। এমনকি বাসার জন্য মাছ, মাংসসহ বাজারও নিয়েছে।
নিজের ছবিতে যখন আর কাজ হচ্ছিল না, তখন বান্ধবীর ছবি ব্যবহার করে প্রতারণা শুরু করে সামিয়া। রুম ডেটের জন্য বিকাশে টাকা নেয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ব্লক করে দেওয়া হতো।
অভিযুক্ত সামিয়ার এসব অপকর্মের এবং বিভিন্ন পুরুষের কাছ থেকে টাকা লেনদেনের অডিও ও মেসেজের তথ্য গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।
বান্ধবীর দ্বারা এমন হেনস্তার শিকার হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষার্থী। বান্ধবীর নামে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, আমি রাস্তাঘাটে বের হতে পারছি না। সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছি। বান্ধবী হয়ে আমার এত বড় ক্ষতি করলো। আমি এই ঘটনার বিচার চাই। তার দ্বারা যেন অন্য কেউ আর প্রতারিত না হয়।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক শ্রেণির নারী প্রতারক চক্র পুরুষদের নানাভাবে প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়।
এসব ক্ষেত্রে পুরুষদের সচেতন হতে হবে। যেকোনো অ্যাপে অ্যাকাউন্ট করার পর কোনো নারী সম্পর্কে ভালোভাবে না জেনে টাকা পাঠালে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post