পতেঙ্গা বে টার্মিনালে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে আরব আমিরাতের আবুধাবি বন্দর। অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি যন্ত্রপাতিও দেবেন তারা।
১৬ মে চুক্তি সইয়ের আগে চট্টগ্রামে বন্দরের কার্যক্রম ও বে টার্মিনাল পর্যবেক্ষণে আসবে একটি উচ্চ পর্যায়ের দল।
অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের চুক্তি করতে যাচ্ছে আরব আমিরাতভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আবুধাবী পোর্ট অথরিটি।
আগামী ১৬ মে এই চুক্তি স্বাক্ষরের সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।
প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়া ডিজাইন অনুযায়ী বে টার্মিনালের ৩টি জেটিতে সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটি এবং দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ডের বিনিয়োগের বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত ছিল।
তবে অবশিষ্ট বন্দরের অংশে সরাসরি বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে আসে আবুধাবী পোর্ট অথরিটি। মূলত চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গেই যৌথভাবে কাজ করবেন তারা।
বিনিয়োগের সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার আগেই অন্যান্য বিদেশি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় প্রথমেই চুক্তি স্বাক্ষর করে রাখছে প্রতিষ্ঠানটি।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল বলেন, আবুধাবি পোর্টের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর পর্যবেক্ষণ করতে আসবে। এই মাসের মাঝামাঝি সময়ে তাদের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে বাংলাদেশের।
চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের পুরো আয়োজন রাজধানী ঢাকায় হলেও, তার আগে ১২ মে বাংলাদেশে আসবে আবুধাবী বন্দরের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলটি।
৩দিন চট্টগ্রামে অবস্থান নিয়ে বন্দরের পাশাপাশি বে টার্মিনাল পর্যবেক্ষণ করবেন তারা। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, আবুধাবী পোর্ট অথরিটি নিজেদের অর্থায়নে অবকাঠামোগত উন্নয়ন যেমন করবে, তেমনি টার্মিনাল পরিচালনার যন্ত্রপাতিও নিজেরাই আনবে বলে জানান বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান।
সাইফ পাওয়ার টেক লিমিটেডের (বাংলাদেশ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমিন বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের মাল্টিপারপাস টার্মিনালে বিনিয়োগের পাশাপাশি আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার আগ্রহ দেখিয়েছে আবুধাবি পোর্ট। এই অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি একটি দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার সম্পর্ক তৈরি করতে চাচ্ছে দেশটি।
একেবারেই সাগরের উপকূলে অবস্থান ও ব্রেক ওয়াটার সুবিধা থাকায় পৃথিবীর সব উন্নত বন্দরই এই বে টার্মিনাল ব্যবহার এবং বিনিয়োগে আগ্রহী।
এ অবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দরকে কৌশলী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)।
অন্যদিকে চুক্তি অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের পর বে টার্মিনালের পুরো স্থাপনা চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে হস্তান্তর করতে হবে বিদেশি প্রতিষ্ঠানটিকে।
এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, এই কাজটি যত দ্রুত শুরু করা হবে, তত দ্রুত ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নিজেদের মেলে ধরতে পারবেন। এটা দেশের জন্য একটি মাইলফলক তৈরি হবে।
১ হাজার ১২৫ মিটার দৈঘ্যের টার্মিনালের একেকটি অংশের জন্য সিঙ্গাপুর পোর্ট কর্তৃপক্ষ দেড় বিলিয়ন এবং ডিপি ওয়ার্ল্ড দেড় বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে।
এছাড়া ব্রেক ওয়াটার সিস্টেমের জন্য বিশ্বব্যাংক বিনিয়োগ করবে আরও ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বছরে ৫০ লাখ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এই বে টার্মিনাল ২০২৬ সালে অপারেশনে যাওয়ার কথা রয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post