গ্রিসে গোল্ডেন ভিসা পাওয়া আরও কঠিন হলো। আবাসন সংকট কাটিয়ে উঠতে রবিবার গোল্ডেন ভিসার নিয়ম কঠোর করলো দেশটি।
এই ভিসা পেতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
গোল্ডেন ভিসা কী?
বিনিয়োগের বিপরীতে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দিয়ে ভিসা দেয়ার নিয়মটিকে গোল্ডেন ভিসা বলা হয়। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে অনেক দেশই এমন সুযোগ দিয়ে থাকে।
এতদিন পর্যন্ত আড়াই লাখ ইউরো (প্রায় তিন কোটি টাকা) বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারীকে পাঁচ বছরের জন্য গ্রিসে বসবাসের অনুমতি দেয়া হতো। বিনিয়োগকারীরা পরবর্তীতে সহজেই এই অনুমতি আরো বাড়িয়ে নিতে পারতেন।
এই প্রকল্পটি বেশ সাফল্যের মুখ দেখেছে। ২০১৪ সালে গোল্ডেন ভিসার নিয়ম ঘোষণার পর হাজার হাজার চীনা বিনিয়োগকারী গ্রিসে নানা ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন।
কিন্তু এখন গ্রিসের নানা অঞ্চলে তীব্র আবাসন সংকট দেখা দেয়ায় এ নিয়মে কিছুটা কঠোর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।
গ্রিক অর্থ মন্ত্রণালয় রোববার ঘোষণা করেছে, নতুন নিয়মে কিছু আকর্ষণীয় স্থানে এখন গোল্ডেন ভিসার জন্য অন্তত আট লাখ ইউরো বিনিয়োগ করতে হবে।
এইসব এলাকার মধ্যে রয়েছে রাজধানী এথেন্স, আটিকা, থেসালোনিকি, মাইকোনোস, সান্তোরিনি এবং তিন হাজার ১০০ জনের বেশি বাসিন্দার দ্বীপগুলো৷ অন্যান্য অঞ্চলে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়িয়ে করা হয়েছে চার লাখ ইউরো।
অর্থমন্ত্রী কোস্টিস হাৎসিদাকিস বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত সরকারের আবাসন নীতির অংশ, যার লক্ষ্য বেসরকারি খাতের সহযোগিতায় সকল নাগরিকের জন্য সাশ্রয়ী এবং মানসম্মত আবাসন নিশ্চিত করা।’
ব্যাংক অব গ্রিসের তথ্য অনুসারে, ২০১৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রায় এক দশক দীর্ঘ অর্থনৈতিক সংকট থেকে বের হয়ে আসার পর দেশটিতে বাসা ভাড়া ২০ শতাংশ বেড়েছে।
বিনিয়োগকারীদের এখন অন্তত ১২০ বর্গ মিটারের একটি সম্পত্তি কিনতে হবে, অন্যদিকে আবাসনে রূপান্তরিত করা ঐতিহাসিক স্থাপনা এবং শিল্প ভবনগুলোর মূল্য হবে অন্তত আড়াই লাখ ইউরো।
অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী গত বছরের ভিসা গ্রহণ বা নবায়নের জন্য রেকর্ড ১০ হাজার ২১৪টি আবেদন জমা পড়েছে।
২০২৩ সালে মোট পাঁচ হাজার ৭০১টি গোল্ডেন ভিসা পারমিট দেওয়া হয়েছে এবং আরো আট হাজার ৮০০টি আবেদন এখনও নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে৷ এক বছরে বিনিয়োগ বেড়েছে অন্তত ১০০ কোটি ইউরো।
গ্রিসের অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিজ অ্যান্ড এন্টারপ্রেনরশিপ- এসএইই অবশ্য এই নীতির কার্যকারিতা নিয়ে সন্দিহান।
২০০৮ সালে শুরু হওয়া অর্থনৈতিক সংকটের পর থেকে সম্পত্তির বাজার এবং নির্মাণ শিল্প একটি গুরুতর মন্দার সম্মুখীন হয়েছিল।
এসএইই বলছে, এখন পর্যন্ত রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগের জন্য প্রায় ২০ হাজার বিনিয়োগকারীকে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
অভিবাসন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, কেবল ২০২১ সালেই ছয় হাজার ৪০৫ জন চীনা নাগরিক গ্রিসে বসবাসের অনুমতি নিয়েছেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post