ওমানের সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মোঃ গোলাম সারোয়ার এখন মালয়েশিয়ার নতুন হাইকমিশনার। গত ১৫ নভেম্বর এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছান।
দেশটির নিয়ম অনুযায়ী বিমান বন্দর থেকেই তাকে নেয়া হয় কোয়ারেন্টাইনে। বর্তমানে তিনি ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। কোয়ারেন্টাইন শেষ হলেই কাজে যোগদান করবেন বলে প্রবাস টাইমকে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত নিজেই।
তিনি মালয়েশিয়া যাওয়ার পরদিন অর্থাৎ ১৬ নভেম্বর ২০২০ থেকেই মালয়েশিয়ায় থাকা অবৈধ কর্মীদের বৈধতা প্রদান শুরু হয়েছে। এটি এই মুহূর্তে দূতাবাসের জন্য অনেক বড় একটি চ্যালেঞ্জ। সময় মতো পাসপোর্ট দিয়ে এবং সঠিক কোম্পানিতে বৈধতার সুবিধা যেন সর্বোচ্চ সংখ্যক বাংলাদেশিকর্মী পায় সেজন্য তার নেতৃত্বে দূতাবাস কাজ করবে। যা মোটেও চাট্টেখানি নয়।
অপরদিকে বাংলাদেশে ছুটিতে গিয়ে আটকে থাকা কয়েক হাজার কর্মী মালয়েশিয়ায় আসতে পারছে না। অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়াতে ছুটিতে থাকা প্রবাসীরা উদ্বিগ্নে রয়েছেন। তাদেরকে পুনরায় মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ তৈরি করা সহ বেশকিছু নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পরবেন তিনি।
আরো পড়ুনঃ ওমানে ভালো বেতনে চাকরী খুজুন অনলাইনে
পেশাদার কূটনীতিক গোলাম সারওয়ার ইতিপূর্বে ওমান এবং সুইডেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জেদ্দা, ওয়াশিংটন ডিসি, কাঠমান্ডু, ইয়াঙ্গুন এবং মালয়েশিয়া বাংলাদেশ মিশনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তার ব্যাপারে সদ্য বিদায়ী হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম বলেছেন, ‘নতুন হাইকমিশনার গোলাম সারওয়ার মেধাবী, অভিজ্ঞ এবং দক্ষ কর্মকর্তা, তিনি আমার থেকেও ভালো করবেন।’
এদিকে করোনা মহামারির প্রকোপে মালয়েশিয়ায় চলাচল, কাজ-কর্মে এবং দেশটির অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। নতুন করে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের বিষয়টিও শুরু হওয়ার দ্বারপ্রান্তে এসে আটকে আছে। যার দ্রুত সমাধান করতে মালয়েশিয়া সম্পর্কে অভিজ্ঞ নতুন হাইকমিশনার সক্ষম হবেন বলে সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেছেন।
এছাড়া বাণিজ্য ও বিনিয়োগে মালয়েশিয়া বাংলাদেশের অন্যতম বড় পার্টনার। বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশ থেকে ব্যাপকভাবে পণ্য আমদানি বৃদ্ধি করতে বিগত হাইকমিশনার সচেষ্ট ছিলেন। বর্তমান হাইকমিশনার করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এবং করোনা উত্তর বাণিজ্যিক সুবিধা আদায় করতে কতটুকু সক্ষম হবেন এটাই দেখার বিষয়।
আরো দেখুনঃ প্রবাসীদের ওমান ছাড়ার হিড়িক
এ বিষয় গুলো নিয়ে গোলাম সারোয়ারের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি আজ প্রবাস টাইমকে বলেন, “যদিও অনেক গুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করবো সবগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার।
করোনায় দেশে এসে আটকেপড়া প্রবাসীদের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা মালয়েশিয়া সরকারকে বুঝানোর চেষ্টা করছি, যেহেতু তারা এই মুহূর্তে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে করোনা নিয়ন্ত্রণের, এই মুহূর্তে মালয়েশিয়া সরকার শুধুমাত্র বাংলাদেশীরাই নয়, সকল দেশের নাগরিকদেরই মালয়েশিয়া প্রবেশের উপর বেশ কড়াকড়ি আরোপ করেছে। সুতরাং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দেশে আটকেপড়া প্রবাসীরা হয়তো পুনরায় মালয়েশিয়া প্রবেশ করতে পারবেন। আমরা তাদের জন্য আপ্রান চেষ্টা করে যাবো।
আরো পড়ুনঃ চ্যালেঞ্জের বোঝা মাথায় নিয়ে আজ ওমানে আসছেন নতুন রাষ্ট্রদূত
বর্তমানে মালয়েশিয়ায় শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আন্তর্জাতিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী, বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, আইটি প্রকৌশলী, কম্পিউটার প্রকৌশলী, ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশি রয়েছেন যারা দেশের ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠা সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।
বিশিষ্টজনেরা বলছেন, শুধু শ্রমিকদের দিকে নজর দিলেই হবে না দূতাবাসকে উভয় দেশের সঙ্গে জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিক্ষা, সংস্কৃতি ক্ষেত্রে এবং কমিউনিটি উন্নয়নের দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন নিযুক্ত হাইকমিশনার গতদিনের অভিজ্ঞতা দিয়ে সকল ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন প্রবাসীরা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post