ওমানে মহামারী করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে, দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৬২৮ জন রোগী সনাক্ত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গত এক সপ্তাহ যাবত দেশটিতে আক্রান্ত এবং মৃত ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও গতকালের তুলনায় আজ আক্রান্ত কমেছে ৩২ জন এবং মৃত কমেছে ২ জন। বুধবার মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯৫ হাজার ৩৩৯ জন। যাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৮৬ হাজার ৪৮২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ২৮৭ জন এবং নতুন ১০ জনের মৃত সহ মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৮৭৫ জন।
দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৬৪ জন। এখন পর্যন্ত ওমানের বিভিন্ন হাসপাতালে মোট চিকিৎসাধীন আছেন ৫১৯ জন। যাদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় আইসিইউতে আছেন ১৯০ জন। দেশটিতে ফের করোনা পরিস্থিতি ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় ইতিমধ্যেই নানা পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে ওমান সরকার। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় ওমানের পুরাতন বিমানবন্দরটি ফিল্ড হাসপাতাল করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়াও জনগণের নিরাপত্তার জন্য সবধরনের পদক্ষেপ হাতে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ওমানের সকল নাগরিক ও প্রবাসীদের সরকারের দেওয়া সকল স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেইসাথে করোনা প্রাদুর্ভাব কমাতে সকলকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার পাশাপাশি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাহিরে না বের হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
ইতিমধ্যেই বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ কোটি ১৮ লাখ ১২ হাজার। আর এ মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৯ লাখ ৭৫ হাজার ৯৫১ জনের এবং আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ১৮ লাখ ১২ হাজার ৮৫৪ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ কোটি ৩৪ লাখ ১৯ হাজার ৩৬১ জন।
বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে, ২ লাখ ৫ হাজার ৪৭৮ জন। বিশ্বে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যাও এই দেশটিতে। এ নিয়ে ৭০ লাখ ৯৮ হাজার ২৯১ জন এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন।
আরো পড়ুনঃ ওমান প্রবেশে আর কোনো বাধা নেই
এদিকে বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিলেও লকডাউনে যাওয়ার কথা ভাবছে না সরকার। গতকাল (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে এ কথা জানিয়েছেন মন্ত্রীপরিষদ সচিব। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে নিজস্ব পরিকল্পনা প্রণয়ন করে সাত দিনের মধ্যে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে জমা দিতে বলা হয়েছে। বিমানবন্দরগুলোতে নজরদারির দায়িত্বে থাকবে সেনাবাহিনী।
গেল কয়েকদিন ধরেই স্বয়ং সরকার প্রধানের ইঙ্গিতের পর কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে মন্ত্রণালয়গুলো। কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ এলে তা সামাল দিতে কী কী পদক্ষেপ নেয়া হবে, তা নিয়েই চলছে প্রতিরোধ পরিকল্পনার কাজ৷
মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ের মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের আহ্বানে বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সচিবদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা। ২ ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে মন্ত্রীপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের বলেন, মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নেয়া হচ্ছ। এ সময়, সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার জানান, বিমান বন্দরে যাত্রীদের আসা -যাওয়া তদারকির পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা রাখা হবে প্রয়োজন মাফিক।
আরো পরুনঃ চলতি বছরেই ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে ওমান
সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লে. জে. মাহফুজুর রহমান বলেন, যারা বাইরে থেকে আসবে তাদের করোনা নেই তার সার্টিফিকেট, এছাড়া যারা আক্রান্ত ছিলেন কতদিন কোয়ারেন্টাইন ছিলেন তার সার্টিফিকেট নেয়া হবে। সন্দেহ হলে তাকে কোয়ারেন্টাইনেও পাঠানো হবে। সর্বাত্মকভাবে এই দুর্যোগের কবল থেকে বাঁচতে কী কী করণীয় রয়েছে, তা নিয়ে মন্ত্রণালয়গুলোকে সাতদিনের মধ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশ দেয়া হয়েছে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের তরফ থেকে।
আজকের বুলেটিন দেখুন ওমানের সব সংবাদ
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post