ফিলিস্তিনিদের বিরোধিতা ও তীব্র প্রতিবাদের মুখেও মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে দুটি আরব দেশের চুক্তি সই ট্রাম্পের অভাবনীয় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবেই দেখছে মার্কিন প্রশাসন। সব সমালোচনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকরণে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি সই করেছে বাহরাইন এবং সংযুক্ত আরব-আমিরাত। এর মধ্যে দিয়ে ইহুদি রাষ্ট্রের সঙ্গে দুই আরব দেশের সম্পর্ক অনন্য উচ্চায় পৌঁছাল। ঐতিহাসিক এ চুক্তিকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের নতুন ভোর’ আখ্যা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ইসরাইলের সঙ্গে দুই আরব রাষ্ট্র সম্পর্ক স্বাভাবিক করায় কড়া নিন্দা জানিয়েছে ইরান ও ফিলিস্তিন।
গতকাল (১৫ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় দুপুরে হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতিতে তিন দেশের এ চুক্তি সই অনুষ্ঠান হয়। সেখানে অতিথিদের উদ্দেশে ট্রাম্প এ চুক্তির প্রশংসায় করে বলেন, ‘কয়েক দশকের বিভক্তি এবং সংঘাতের পর আমরা নতুন মধ্যপ্রাচ্যের যাত্রা শুরু করলাম। আমরা ইতিহাস বদলে দিতে এখানে সমবেত হয়েছি।’
ওই অনুষ্ঠানে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু, আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান ও বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল লতিফ আল জায়ানি নিজ নিজ দেশের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
এ চুক্তি সইয়ের মধ্য দিয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ আরব দেশ হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন ইসরাইলের সঙ্গে পুরোপুরি স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপনে অঙ্গীকারাবদ্ধ হলো। এর আগে ১৯৭৯ সালে মিশর এবং ১৯৯৪ সালে জর্ডান ইসরাইলের সঙ্গে শান্তিচুক্তি সই করেছিল।
আরো পড়ুনঃ ওমানে আসতে নতুন নিয়ম জারি করেছে দেশটির সিভিল এভিয়েশন
এদিকে ইসরাইলের সঙ্গে বাহরাইন এবং আরব আমিরাতের ঐতিহাসিক চুক্তিতে ক্ষোঁভে ফুসছে ফিলিস্তিনিরা। হোয়াইট হাউজে যখন ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় চুক্তি সম্পাদন চলছে তখন অধিকৃত পশ্চিম তীর, রামাল্লা এবং অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মঙ্গলবার আলাদা আলাদা কর্মসূচি বের করেন ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনিরা। মঙ্গলবার ১৫ সেপ্টেম্বর রাজপথে চুক্তিবিরোধী প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্লোগান দেন হাজারো ফিলিস্তিনি। আলাদা বিক্ষোভে দুই আরব রাষ্ট্রকে ধিক্কার জানান আন্দোলনকারীরা।
ফিলিস্তিন থেকে সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা এবং অবরোধ প্রত্যাহার করে নিলেই মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরে আসব বলে জানান অনেকে। তারা বলেন, ‘ইসরাইল যখন ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে প্রতিনিয়ত ফিলিস্তিনিদের ঘর-বাড়ি অবৈধভাবে উচ্ছেদ এবং গুঁড়িয়ে দিচ্ছে এ বিষয়ে বিশ্বের ক্ষমতাসীন নেতারা নিশ্চুপ। দিনের পর দিন নির্মমভাবে নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের গুলি করে হত্যা করছে ইসরাইলি সেনারা।’
আরো পড়ুনঃ ভারত থেকে ভ্যাকসিন নিবে ওমান
বিক্ষোভে ফিলিস্তিনিরা নেতানিয়াহু, ট্রাম্প, বাহরাইনের বাদশাহ এবং আমিরাতের ক্রাউন প্রিন্সের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন তারা। দুই আরব রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের সঙ্গে চূড়ান্ত বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। এই চুক্তিকে প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনের বিভিন্ন সংগঠন। এক বিবৃতিতে আগামী শুক্রবার ১৮ সেপ্টেম্বর শোক পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। ফিলিস্তিনের সকল ভবন এবং বাড়িতে কালো পতাকা তুলতে বলেন সংগঠনের নেতারা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post