পৃথিবী মানুষের আমলের শস্যক্ষেত্র। দুনিয়া পরীক্ষার জায়গা। আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের বিভিন্ন সময় বিপদাপদ, অর্থসংকট ও বালা-মুসিবতে আপতিত করেন। এভাবেই তিনি পরীক্ষা করেন। বান্দা তার কাছেই ফিরে আসে, না আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত হয়।
“আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা বিপদাপদ সব সময় আজাব ও শাস্তিরূপে পতিত হয় না। কখনো বান্দার ইমানি পরীক্ষা ও ধৈর্য যাচাই করা হয়ে থাকে। যারা আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রেখে ধৈর্য ধারণ করে, আল্লাহ তাদের উত্তম বিনিময় দান করেন।”
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের কিছু ভয় ও ক্ষুধা দ্বারা, ধন-সম্পদের ক্ষতি ও প্রাণহানি এবং ফল-ফসলের ক্ষতি দ্বারা পরীক্ষা করব। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। (সুরা আল বাকারা ১৫৫)
মানুষের কঠিন বিপদ আর সংশয়ের সময় আল্লাহ তাআলা নিজ অনুগ্রহে পথ দেখান। শত অন্ধকার থেকে তিনি বান্দাকে আলোর দিকে নিয়ে যান। আল্লাহ তাআলা বলেন, আল্লাহ মুমিনদের অভিভাবক।
তিনি তাদের অন্ধকার থেকে বের করে আলোতে নিয়ে আসেন। আর যারা কুফর অবলম্বন করেছে তাদের অভিভাবক শয়তান, যারা তাদের আলো থেকে বের করে অন্ধকারে নিয়ে যায়। তারা সবাই অগ্নিবাসী। তারা সর্বদা তাতেই থাকবে (সুরা বাকারাহ ২৫৭)
“অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের মাতৃগর্ভ থেকে এমন অবস্থায় বের করেছেন যে তোমরা কিছুই জানতে না। তিনি তোমাদের জন্য কান, চোখ ও অন্তঃকরণ সৃষ্টি করেছেন। যাতে তোমরা শোকর আদায় করো।” (সুরা নাহল ৭৮)
একজন সাহাবি বললেন, ইয়া রসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া আমার প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছে। (অর্থাৎ আমি চরমভাবে অভাবগ্রস্ত) রসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার কি ঐ তাসবিহ স্মরণ নেই, যে তাসবিহ ফেরেশতা এবং মাখলুকের, যার বরকতে রুজি প্রদান করা হয়। যখন সুবহে সাদিক উদিত (শুরু) হয় তখন এ তাসবীহ ১০০ বার পাঠ কর
উচ্চারণ: সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আলিয়্যিল আযীম, ওয়া বিহামদিহি আস্তাগফিরুল্লাহ।
অর্থ: মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রশংসা তার জন্য; মহাপবিত্র আল্লাহ, যিনি সমুচ্চ, মহান; এবং সকল প্রশংসা তার জন্য, আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।
যদি ১০০ বার পড়, তাহলে দুনিয়া তোমার নিকট অপমানিত হয়ে আসবে। (অর্থাৎ তুমি সহজেই সচ্ছলতা লাভ করবে।) ঐ সাহাবি রা. চলে গেলেন। কিছুদিন পর পুনরায় হাজির হয়ে, আরজ করলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! দুনিয়া আমার নিকট এত বেশি আসছে, আমি হতবাক! কোথায় উঠাব, কোথায় রাখব! (আল খাসায়িসুল কুবরা, ২য় খণ্ড, ২৯৯ পৃষ্ঠা)
হযরত আব্দুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, নবী সা. আল্লাহর কাছে সচ্ছলতা চেয়ে এই বলে দোয়া করতেন,
“اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنَى উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল হুদা, ওয়াত তুকা, ওয়াল আফাফা, ওয়াল গেনা।”
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে হেদায়াত, তাকওয়া, নিষ্কলুষতা ও সচ্ছলতার জন্য প্রার্থনা করছি। (মুসলিম ৬৬৫৬)
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post