প্রশ্ন: হায়েজ বন্ধ হওয়ার পর ফরজ গোসলের পূর্বে কি স্ত্রী সহবাস করা বৈধ?
উত্তর:
কোন ঈমানদার ব্যক্তির জন্য হায়েজ বা ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার পর গোসলের মাধ্যমে পূর্ণ পবিত্র হওয়া পর্যন্ত স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হওয়া বৈধ নয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ ۖ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِي الْمَحِيضِ ۖ وَلَا تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّىٰ يَطْهُرْنَ ۖ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللَّـهُ ۚ
“আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে হায়েয (ঋতুস্রাব) সম্পর্কে। বলে দাও, এটা অশুচি। সুতরাং তোমরা হায়েজ অবস্থায় স্ত্রীগমন থেকে বিরত থাক। তখন পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হবে না (স্ত্রী সহবাস করবে না) যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়। অত:পর যখন উত্তম রূপে পবিত্রতা অর্জন করবে তখন তাদের কাছে গমন কর-যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে হুকুম দিয়েছেন।” [সূরা বাকারা: ২২২]
আল্লাহ তাআলা উক্ত আয়াতে উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন না করা পর্যন্ত স্ত্রীগমনে নিষেধ করেছেন। আর ঋতুবতি মহিলার হায়েজ বন্ধ হওয়ার পর সে ততক্ষণ পর্যন্ত পরিপূর্ণ পবিত্র হিসেবে গণ্য হবে না যতক্ষণ না গোসলের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করে।
▪️ইবনে কুদামা রহ. বলেন,
فإن انقطع دمها فلا توطأ حتى تغتسل، وجملته أن وطء الحائض قبل الغسل حرام وإن انقطع دمها في قول أهل العلم. قال ابن المنذر وهذا كالإجماع منهم
“রক্ত বন্ধ হলে গোসল করা পর্যন্ত সহবাস করো না। মোটকথা, আলেমদের মতে গোসলের আগে ঋতুমতী নারীর সাথে সহবাস করা হারাম যদিও তার রক্ত বন্ধ হয়ে যায়। ইবনুল মুনজের বলেন, এটি যেন ইজমা বা সর্বসম্মত মত।” [আল মুগুনী]
– ইমাম আহমদ বিন মুহাম্মদ আল মারওয়াযি বলেন,
لا أعلم في هذا خلافا
“এ ব্যাপারে কোন দ্বিমত আছে বলে জানি না।” [Islamweb]
▪️ শাইখ আব্দুল আজিজ বিন বায রহ.-এর ফতোয়া:
السوال: وطء الحائض إذا طهرت قبل الاغتسال؟
الجواب:
لا ما يجوز فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ [البقرة: 222] حتى تطهر فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللَّهُ [البقرة: 222].
س: والحالة هذه يلزمها الكفارة؟
الشيخ: إذا وطأها قبل الغسل نعم
প্রশ্ন: ঋতুমতি নারী পবিত্র হলে গোসলের পূর্বে কি তার সাথে সহবাস করা জায়েজ?
উত্তর: না, পবিত্রতা অর্জন করা পর্যন্ত তা জায়েজ নয়।
فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ
“পবিত্রতা অর্জন করলে স্ত্রী গমন কর।” [সূরা বাকারা: ২২২]
فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللَّـهُ
“অত:পর যখন উত্তম রূপে পবিত্রতা অর্জন করবে তখন তাদের কাছে গমন কর-যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে হুকুম দিয়েছেন।” [সূরা বাকারা: ২২২]
– প্রশ্ন: এ অবস্থায় যদি কেউ স্ত্রী সহবাস করে তাহলে কি কাফফারা দেওয়া আবশ্যক?
উত্তর:
হ্যাঁ, গোসলের পূর্বে যদি স্ত্রী সহবাস করে তাহলে (কাফফারা দেওয়া আবশ্যক)। [Binbaz]
সুতরাং কেউ যদি অজ্ঞতা বশত: এমনটি করে তাহলে এ বিষয়ে জানার পর তার জন্য করণীয় হল, আল্লাহর নিকট তওবা-ইস্তিগফার করা এবং ভবিষ্যতে আর এমনটি না করা।
আল্লাহু আলাম।
▬▬▬ ◈◉◈▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post