ওবায়দুল হক গ্রামের অনেক তরুণের মতোই জীবিকার তাগিদে প্রবাসী হয়েছিলেন। আবার বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন প্রায় সবাই প্রবাসী। তাদের মতোই ভাগ্য বদলাতে উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পরই সৌদি আরবে পাড়ি জমান নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের ওবায়দুল।
বাবাকে আগেই হারিয়েছিলেন। ৭ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে ওবাইদুল সর্বকনিষ্ঠ। এবার তিনিও চলে গেলেন না ফেরার দেশে। সৌদি আরবের দাম্মাম শহরের একটি ফার্নিচার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়েছেন ৩৪ বছরের ওবায়দুল।
গত শুক্রবার জু্মার নামাজে যাওয়ার আগে ভিডিওকলে মায়ের সঙ্গে কথা বলেন ওবায়দুল। নামাজ শেষে দুপুরে কী খাবেন তাও জানিয়েছিলেন। সন্ধ্যার পর দাম্মামের আরেকটি কারখানায় কর্মরত মামাতো ভাই ইয়াদুল ফোন করে জানান ওবাইদুলের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের কথা। পরে রাতভর তারা যোগাযোগের চেষ্টা করেন ছেলের সঙ্গে। পরে শনিবার ভোরে ইয়াদুল জানান ওবায়দুলের মৃত্যুর কথা।
ছেলে হারানোর শোকে স্তব্ধ মা রাহেলা বিবি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কিছুদিনের মধ্যেই দেশে ফিরে বিয়ে করার ইচ্ছা ছিল ওবায়দুলের। তবে প্রায়ই সে বলতো, সৌদিতেই আজীবন থাকতে চায়।’
ফ্রেমে বাঁধানো ছেলের ছবি হাতে নিয়ে অপলক চেয়ে আছেন মা। সেই দৃশ্য দেখে স্বজনরা চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না। আদরের ছোট ভাইকে হারানোর শোক সইতে পারছে না ভাই-বোনরাও। তাদের বিশ্বাস করতেই কষ্ট হচ্ছে যে, গতকাল কথা বলা ওবায়দুল পৃথিবীর সব মায়া ত্যাগ করেছে।
স্বজনরা জানান, প্রবাসীদের সচ্ছলতা দেখে বিদেশ যাওয়ার আগ্রহ জন্মে ওবায়দুলের। ২০১৯ সালে পাড়ি জমান সৌদি আরবে। প্রথমে সেখানকার একটি কোম্পানিতে কাজ নেন। কিছুদিন পর সেখান থেকে কাজ নেন একটি ফার্নিচার কারখানায়। আজ ভোরে গ্রামে পৌঁছে ওবায়দুলের মৃত্যুর খবর। মুহূর্তেই বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
Discussion about this post