কোনো ধরণের এজেন্সি ছাড়াই স্বপ্নের দেশ ইতালিতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ থেকেও চাইলে পুরোপুরি বৈধভাবে ইতালি যাওয়া যায়। এর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন ইতালির ইউনিভার্সিটি অব ইস্টার্ন পিয়েমন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মো. মঈদুল ইসলাম নোমান।
প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তিনি বলেন, বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ, বৃত্তিসহ পড়াশোনা এবং নামমাত্র পড়াশোনার খরচ—এসব বিষয় মাথায় রাখলে ইতালি হতে পারে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য উত্তম গন্তব্য। ইতালিতে উচ্চশিক্ষার জন্য ইতালীয় সরকার বিভিন্ন ধরনের বৃত্তি প্রদান করে থাকে, প্রায় শতভাগ পর্যন্ত এসব বৃত্তি শিক্ষার্থীরা পেয়ে থাকে। যার পরিমাণ বৃত্তিভেদে বাৎসরিক প্রায় ৬ হাজার ৫০০ থেকে ১০ হাজার ইউরো হয়ে থাকে। যা দিয়ে একজন শিক্ষার্থী সহজেই নিজের জীবনযাত্রা চালিয়ে নিতে পারে। এসব বিষয় বিবেচনা করলে শিক্ষার্থীদের কাছে ইতালি নিঃসন্দেহে একটি ভালো গন্তব্য।
বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের ইতালিতে উচ্চশিক্ষার সুযোগ-সুবিধার কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘ইতালিতে অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি করার সুযোগ রয়েছে। একজন শিক্ষার্থী ইন্টারনেট থেকে খুঁজে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইট থেকে আবেদন করার যোগ্যতা এবং প্রয়োজনীয় সব তথ্য পেতে পারে।’ নোমান যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের কথা বলেছেন, তা আমাদের ভিডিও ডেসক্রিপশনে দেওয়া আছে। (স্নাতকের জন্য: www.bachelorsportal.com । স্নাতকোত্তরের জন্য: www.mastersportal.com)
আবেদন এবং প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি বলেন, সাধারণত বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ইতালিতে একটাই শিক্ষাবর্ষ হয়ে থাকে, যা শুরু হয় সেপ্টেম্বর থেকে। আর এর জন্য আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয় সাধারণত জানুয়ারি থেকে এবং চলে মে পর্যন্ত। তবে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগে বা পরেও হয়ে থাকে।
নিজের পছন্দের বিষয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে এরপর প্রয়োজনীয় তথ্য এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করতে হবে। এরপর সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে আবেদন করা যাবে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য কোনো ফি দিতে হয় না। আবার কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য ২০-৪০ ইউরো লেগে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদনের সময় সাধারণত পাসপোর্ট, একাডেমিক সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট, ভাষা যোগ্যতার সনদ, সিভি, মোটিভেশন লেটার, রিকমেন্ডেশন লেটার ইত্যাদির প্রয়োজন হয়।
নোমান বলেন, ইতালিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে অফার লেটার পেলেই যে ইতালিয়ান এম্বাসি ভিসা দিয়ে দেবে—এমনটা নয়। তাই ভিসা আবেদনের সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিকভাবে জমা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। যেমন কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আইইএলটিএস ছাড়াও শিক্ষার্থীদের গ্রহণ করে। কিন্তু দেখা যায়, এম্বাসি তাকে ভিসা দেয় না। সে ক্ষেত্রে আইইএলটিএস স্কোর কমপক্ষে ৬ থাকাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
ইতালিতে পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন কাজ করার সুযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে ইতালিয়ান ভাষায় দক্ষতা অর্জন অত্যন্ত জরুরি। তিনি সবাইকে সতর্ক করে বলেন, ইতালিতে উচ্চশিক্ষার সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি এখনো বাংলাদেশি অনেক শিক্ষার্থী বা অভিভাবক জানেন না। যার কারণে অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক দেশের এডুকেশন এজেন্সিদের শরণাপন্ন হয়ে থাকেন। আর এই সুযোগ গ্রহণ করে অসাধু এজেন্সির মালিকেরা একটা মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে থাকে। অথচ ইতালিতে উচ্চশিক্ষার জন্য ভিসা পাওয়া পর্যন্ত সামান্য খরচ হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি এজেন্সির লোকেরা অদক্ষ হওয়ার কারণে তারা সঠিকভাবে শিক্ষার্থীদের প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করতে পারে না। যার ফলে অনেক শিক্ষার্থী ইতালি আসতে পারলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে না এবং অনেকে বৃত্তি হারিয়ে বিপদে পড়ে। শেষে অনেক ছাত্র-ছাত্রী ঝরে পড়ে পড়াশোনা থেকে।
এক্ষেত্রে সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে একটি ফেসবুক পেইজ। যার লিংক আমাদের ভিডিও ডেসক্রিপশনে দেওয়া আছে। ) যেকোনো শিক্ষার্থী ওই ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হয়ে যেকোনো প্রশ্ন করে পোস্ট করলে ইতালিতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা তথ্য দিয়ে সাহায্য করে থাকে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post