রেমিট্যান্স মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আনার পরিকল্পনা বাংলাদেশ ব্যাংকের সময়োপযোগী একটি সিদ্ধান্ত। এতে শুধু হুন্ডির ব্যবহার কমবে না; ডলার সংকটও কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে দেশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সহজে রেমিট্যান্স আনার মতো সুযোগ-সুবিধা থাকার পরেও হুন্ডির ব্যবহার ঠেকানো সম্ভব হবে কি?
আমি মনে করি, হুন্ডির মাধ্যমে টাকা আসা একেবারেই বন্ধ করতে সরকারের আরও একটি সুবিধা প্রবাসী শ্রমিকদের দেওয়া দরকার আর সেটা হলো অবসরভাতা। নির্দিষ্ট কিছু নীতিমালা প্রণয়ন করে প্রবাসী শ্রমিকদের শ্রেণিভেদে এককালীন এবং মাসিক অবসরভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এতে করে বৈধভাবে দেশে টাকা আসার পাশাপাশি অবৈধভাবে বিদেশ গমন শূন্যের কোটায় নেমে যেতে পারে।
দিন দিন অবৈধপথে বিদেশ গমন বেড়েই চলছে। এ অবৈধ প্রবাসী শ্রমিকরাই হুন্ডির ব্যবহার করে বেশি। প্রবাসে তাদের বৈধভাবে ঘোরাফেরার সুযোগ না থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলগুলোতে টাকা পাঠাতে পারেন না। এতে বাধ্য হয়ে হুন্ডি এজেন্টদের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাতে হয়। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) তথ্যমতে, ‘অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশকারীদের তালিকায় শীর্ষ দশে রয়েছে বাংলাদেশ। সংস্থাটির ২০২১ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘অবৈধভাবে বিদেশ গমনকারী দেশের তালিকায় চতুর্থ নম্বরে বাংলাদেশ।’
ব্র্যাকের পর্যবেক্ষণ মতে, ২০০৯ থেকে ২০২১ পর্যন্ত অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশ করতে গিয়ে প্রায় ৩৩ হাজার বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হয়েছেন। অন্যদিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তথ্যমতে, গত এক বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে। যারা দীর্ঘদিন প্রবাসে শ্রমিক হিসাবে থেকে দেশে মোটা অঙ্কের রেমিট্যান্স পাঠাবেন, দেশে ফেরার পর তাদের জন্য এককালীন এবং পাশাপাশি মাসিক অবসরভাতা প্রদানের চিন্তা ভাবনা করা যেতে পারে। আর যারা রেমিট্যান্স পাঠানোয় কম অবদান রাখবেন, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের জন্য শুধু এককালীন অবসর ভাতার ঘোষণা এলে সবাই বৈধপথে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে আগ্রহী হয়ে উঠবে। একই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যেতে পারে অবৈধ পথে বিদেশ গমনের অভিশপ্ত প্রথা।
ইনচার্জ, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, দুর্গাপুর বাজার এজেন্ট আউটলেট, কাহালু, বগুড়া
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post