ফ্লাজার্মানির আকেন শহর থেকে ব্রাজিলের পোর্তো অলেগ্রিতে বিমানে লাগে ১৮ ঘন্টা। কিন্তু সে ফ্লাইটি গন্তব্যে পৌঁছোতে সময় লেগেছে ৩৫ বছর। ইটি ব্রাজিলের এয়ারপোর্টে ল্যান্ট করার পর ভেতরের দৃশ্য দেখে শিউরে ওঠেন পোর্তো আলেগ্রি বিমানবন্দরের কর্মীরা। কারণ সেই ফ্লাইটে বিমানের প্রতিটি সিটে সাড়ি সাড়ি কঙ্কাল। এমনকি প্লেনের পাইলট তিনিও কঙ্কালে পরিণত হয়ে গিয়েছিলো। এ ঘটনা ঘিরে অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে, যেমন দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে বিমানটি কোথায় ছিলো, বিমানে থাকা ৯২ যাত্রীর সাথে সেদিন কি ঘটেছিলো! আর এক জন মৃত পাইলট কিভাবে নিরাপদে বিমান অবতরণই বা করলো? আজ আমরা সেই রহস্যময় ফ্লাইটের কথা।
১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সান্তিয়াগো এয়ারলাইন্সের একটি বিমান পোর্তো অলেগ্রিতে যাওয়ার জন্য আকাশে ওড়ে। এদের মধ্যে ৮৮ জন যাত্রী আর ৪ জন ছিলো ক্রু মেম্বার। এ ফ্লাইট গন্তব্য পৌছাতে ১৮ ঘন্টা সময় লাগার কথা ছিলো। কিন্তু আটলান্টিক মহাসাগরের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় বিমানটি কন্টোল সেন্টারের সাথে যোগাযোগ বিছিন্ন হযে যায়। বিমানটি রাডার থেকে পুরোপুরি ভাবে গায়েব হয়ে গিয়েছিলো। কন্টোল সেন্টার মনে করে বিমানটি কোন দূর্ঘটনায় শিকার হয়েছে।
এভাবে দিন-মাস কিংবা বছরের পর বছরও কেটে গেছে,নিখোঁজ বিমানটিকে দুবছর ধরে খোঁজা হয়। সমুদ্রে নামানো হয় ডুবুরি। তবে ফ্লাইট একটা টুকরোরও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এরপর কয়েক দশক কেটে যায়। বিমান নিখোঁজ হওয়ায় দুর্নামে ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে বাধ্য হয় সান্তিয়াগো এয়ারলাইন্স। বন্ধ করা হয় সন্ধান পর্বও।
তবে হঠাৎ ১২ অক্টোবর ১৯৭৯সালে ৩৫ বছর পর সান্তিয়াগো এয়ারলাইন্সের বিমানটি ব্রাজিলের পোর্তো আলেগ্রির বিমানবন্দরের-মাথায় চক্কর কাটতে দেখা যায়। অথচ বাস্তবে তখন সান্তিয়াগো এয়ারলাইন্সের কোনো অস্তিত্বই নেই। বিমানটি যখন অবতরন করে তখনই মানুষ জানতে পারে এটিই ‘ফাইভ হান্ডেড থার্টিন’ যে টি ৩৫ বছর আগে গায়েব হয়ে যায় ।
পরে সবাই অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে, তাও কেউ বিমান থেকে কেউ বাহিরে আসলো না । পরে বিমানবন্দরের পক্ষ থেকে বিমানচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়েই নিরাপত্তারক্ষীদের বিমানটির দরজা খোলেন, তখনই হতভম্ব হয়ে যান সবাই। তারা তখন দেখলেন প্রতিটি ব্যক্তি কঙ্কাল হয়ে গিয়েছিলো। তারা প্রত্যকে অনেক বছর আগে মারা গিয়েছিলেন।
এরপর পাইলট চেম্বারের দরজা খোলার চেষ্টা করা হয়, কারণ বিমানটি খুব নিরাপদে ল্যান্ড করা হয়েছিলো। তখন তারা সবাই মনে করতে লাগলো বিমানের পাইলট হয়তো জীবিত আছেন। কিন্তু ককপিটের দৃশ্য ভয়ানক ছিলো, পাইলটও কঙ্কাল হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু তার হাত তখনও ইমিগ্রশন প্যানেলে উপরে ছিলো। অর্থাৎ সেই বিমানটি মৃত পাইলটই প্লেনটিকে নিরাপদে অবতরণ করিয়ে ছিলেন।
ব্রাজিল সরকার এ বিমানের ইনভেস্টিগেশন সিক্রেট রাখেন। সেই সময়ের বিখ্যাত প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিস্ট ড. সেলসো অ্যাটেলো এ পুরো ঘটনা তদন্ত করেন। এর পর তিনি বুঝতে পারেন এ প্লেনটি একটি টাইম লোপে আটকে ছিলো। অর্থাৎ বিমানটি যাত্রা করার সময় পথে কোন একটি জায়গায় আটকে গিয়েছিলো। সেখানে সময় পৃথিবীর চাইতে দ্রুত গতিতে চলে। সেই অনুযায়ী বিমানটি জার্মানি থেকে আসতে ১৮ ঘণ্টাই লেগে ছিলো, কিন্তু সেটি প্লেন অনুযায়ী। কিন্তু এখানে পৃথীবিতে ৩৫ বছর কেটে গেছে। যখন বিমানটি টাইম লোপ থেকে বের হয়ে পৃথিবীতে পৌছায় তখন পৃথিবী অনুযায়ী ৩৫ বছর পার হযে গেছে। তখন এখানে আসতে সকলের মৃত্যু হয়।
তবে, বলে রাখা দরকার ঘটনাটা ভূতুড়ে। এই ঘটনার কোনো ব্যখ্যা এখনও পাওয়া যায়নি। আর বিশ্বাসীরা আজও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সুযোগ পেলেই এই গল্প শোনান। তবে যে যা-ই বলুক, সান্তিয়াগোর ফ্লাইট নম্বর ৫১৩ আজও জবাবহীন ধাঁধাঁ। ১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সান্তিয়াগোর এয়ারলাইন্সের ৫১৩ নম্বর বিমান মাটি থেকে আকাশে ওড়ে। তারপর হঠাৎই বেপাত্তা হয়ে যায়। রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে প্যান অ্যাম ফ্লাইট-৯১৪ নামের কোনো বিমান এবং ফ্লাইটের বাস্তবিক কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাদের প্রতিবেদনে এটিকে অসত্য সংবাদ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ওমানের জাতীয় দিবসের বাকি ২ দিন, উদযাপনে
ওমানে বিশ্বকাপের ছোঁয়া, মাস্কাটে পৌঁছেছে জার্মান
কাতার বিশ্বকাপে সেবা দিবে ৮ হাজার বাংলাদেশি
প্রবাসী কর্মীকে চাকরীচ্যুত করায় পৌনে দুই লাখ
ওমানের আল খয়েরে পুলিশের কঠোর অভিযান
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post