৫২ তম জাতীয় দিবস উদযাপন করতে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শান্তিপ্রিয় দেশ ওমান। ২ লক্ষ ৭২ হাজার বর্গকিমি আয়তনের এই দেশটিতে আজ থেকে ৪০ বছর পূর্বে ছিলনা কোনো পাকা সড়ক। এমনকি স্কুল কলেজ সহ আধুনিক কোনো কিছুই ছিলনা এই ওমানে। মাত্র ৬ মাইল পাকা রাস্তা ছিলো। আজ কেউ গিয়ে দেখে আসুক, ঐদেশের রাস্তাঘাট কতদূর চলে গেছে! যে দেশে একটা হসপিটালও ছিলনা, আজ সেই দেশেই হসপিটাল বেইসড চিকিৎসা সেবা এমন এক স্তরে পৌঁছেছে, যা কল্পনাও করেনি সেই দেশের মানুষ।
সেই ওমানের ৫২ তম জাতীয় দিবস বেশ ঘটা করেই পালন করতে যাচ্ছে এবার। করোনার কারণে বিগত দুই বছর তেমন বড় পড়িসরে পালন করতে না পারলেও এ বছর দেশটির মাস্কাট, ধোফার এবং মুসান্দাম প্রদেশে হাই-টেক লেজার শো ও ড্রোন শো প্রদর্শন করা হবে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে ইতোমধ্যে সাজানো হয়েছে গোটা ওমান।
আগামী ১৮ নভেম্বর জাতীয় দিবস উপলক্ষে ধোফারের আন নাসর স্কয়ারে সামরিক কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করবেন দেশটির সুলতান হাইথাম বিন তারিক আল সাইদ। নাগরিকদের অংশগ্রহণে ওমানের সব প্রদেশে বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে ওইদিন। এ বছরের জাতীয় দিবস উদযাপনের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে ড্রোন শো, লেজার শো এবং তার সঙ্গে থাকা অনুষ্ঠান। আগামী ১৮ ও ১৯ নভেম্বর মাস্কাটে দুটি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে, ১৮ নভেম্বর ধোফারে এবং ২৩ নভেম্বর মুসান্দাম প্রদেশে এগুলো অনুষ্ঠিত হবে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশ যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করলেও ওমানের ক্ষেত্রে তা একেবারেই ভিন্ন। ওমান ১৯৫১ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করলেও তাদের জাতীয় দিবস পালন করা হয় প্রয়াত সুলতান কাবুসের ক্ষমতা গ্রহণের দিনটিকে কেন্দ্র করে। সুলতান কাবুসকে নিজেদের জন্য এক আশীর্বাদ স্বরূপ মনে করেন ওমানিরা। দেশটির নাগরিকদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, নিজের জন্মদাতা পিতার মতই তারা সুলতান কাবুসকে সম্মান করেন।
আরব বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী শাসক ছিলেন ওমানের সুলতান কাবুস বিন সাইদ আল সাইদ। ১৯৭০ সালে ব্রিটিশদের সহায়তা নিয়ে তিনি তাঁর পিতাকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করে ২৯ বছর বয়সে নিজে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। এরপর দেশটির তেল সম্পদকে কাজে লাগিয়ে তিনি ওমানকে উন্নয়নের পথে আনেন। সুলতান কাবুস ওমানের জনগণের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন এবং তার হাতেই ছিল সম্পূর্ণ রাজতন্ত্র।
সুলতান কাবুস ১৯৭০ সালে যখন ওমানের সিংহাসনে আরোহণ করেন তখন দেশটিতে মাত্র ১০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা আর তিনটি স্কুল ছিল। কৃষক আর জেলেদের দেশ হিসেবে পরিচিত ওমানে তখন অবকাঠামো বলতে তেমন কিছু ছিল না। বাইরের পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন ওমান তখন দারিদ্র্য পীড়িত একটি দেশ। কিন্তু সেই গরিব ওমান আজ আরব বিশ্বের একটি আধুনিক ধনি রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত। উন্নত অবকাঠামো আর নাগরিকদের স্বচ্ছল জীবন যাপনের জন্য ওমান অন্যতম সুখী আর শান্তিপূর্ণ একটি দেশ। ওমানের আজকের যত পরিচিতি তার মুলে রয়েছেন সুলতান কাবুস বিন সাঈদ আল সাঈদ।
আরো পড়ুন:
পাকিস্তানের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ সহায়তা দিল ওমান
প্রবাসীদের জরিমানা বৃদ্ধি করে দ্বিগুণ করলো
ওমান সহ মধ্যপ্রাচ্যে রমজান শুরুর সম্ভাব্য তারিখ
সিআইপি নির্বাচিত হচ্ছেন ৬৭ প্রবাসী, সংখ্যায় দ্বিতীয়
ক্ষোভ আর অভিমানে হুন্ডিতে ঝুঁকছেন প্রবাসীরা
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post