স্ত্রীকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন প্রবাস ফেরত স্বামী। ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে এই ঘটনা ঘটে। পারিবারিক কলহ ও দুই পরিবারের সম্পর্কে টানাপোড়নের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। জানাগেছে, চার মাস আগে দেশে ছুটি কাটিয়ে সৌদি যান ভোলার লালমোহনের নোমান হোসেন। এরপর পরিবারের কাউকে না জানিয়েই গত ১০ সেপ্টেম্বর হঠাত দেশে আসেন তিনি। পরে, স্ত্রীকে ঢাকা ঘুরিয়ে দেখাবেন বলে বাড়ি থেকে স্ত্রী শামীমাকে নিয়ে ঢাকায় এসে এক বন্ধুর বাসায় ওঠেন।
নিহত শামীমার ভাই শামীম হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আমার বোন আগামী বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিবে। পড়ালেখার কারণে তাকে তুলে নেওয়া হয়নি। সে আমাদের বাড়িতেই থাকত। বোনজামাই দেশে এসে আমার বোনকে ঢাকা ঘুরিয়ে দেখানোর কথা বলে হত্যা করে নিজেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। বোনজামাই বিদেশ থাকাকালীন বোনের সঙ্গে কোনো ধরনের মনোমালিন্য হয়নি। কী কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সে বিষয়ে কিছু বুঝতে পারছি না। আমাদের আত্মীয়দের মাধ্যমেই দুজনের বিয়ে হয়েছিল। কাউকে না জানিয়ে কি কারণে তিনি দেশে এসে আমার বোনকে ঢাকায় নিয়ে গেলেন বুঝতে পারলাম না। যদি জানতাম তার সঙ্গে কোনো মনোমালিন্য বা ঝগড়া হয়েছে তাহলে কিছু আঁচ করতে পারতাম।
তিনি আরও বলেন, বিদেশ থেকে এমন কোনো চিন্তা-ভাবনা করে এসেছিলেন কিনা সে বিষয়েও কিছু বুঝতে পারছি না। এইচএসসি পরীক্ষার পর তাকে তুলে নেওয়ার কথা ছিল। দুজনের একজনও বেঁচে নেই। কী ঘটনা ঘটেছিল জানতে পারছি না। আমাদের কারো প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু কী এমন হয়েছিল যে দেশে এসে স্ত্রীকে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যা করলেন? তাদের দুজনের মৃত্যুর কারণ খুঁজছে পুলিশ।
গতকাল রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ৯৯৯ খবর পেয়ে মোহাম্মদপুরের বাবর রোডের একটি বাসার তৃতীয় তলা থেকে নোমানের ঝুলন্ত মরদেহ ও স্ত্রী শামীমাকে বিছানায় মৃত অবস্থায় পায় মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। পরে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. মুজিব পাটোয়ারী গণমাধ্যমকে বলেন, দিনের যেকোনো সময় প্রথমে স্ত্রীকে গলা টিপে বা বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার পর নিজেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে মনে হয়েছে। রাতে আলামত সংগ্রহের জন্য সিআইডির ফরেনসিক টিম গিয়েছিল। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, নোমান চাদর পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ও শামীমাকে ফ্লোরে তোষকের ওপর মৃত অবস্থায় পাই। কী কারনে এ ঘটনা ঘটেছে তার কারণ এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।
জানাগেছে, স্ত্রী শামীমাকে নিয়ে বাসা ভাড়া নেন মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে। একই বাড়ির পাঁচতলায় ভারা থাকতেন নোমানের বন্ধুরা। ঘটনার দিন বাড়িওয়ালাকে তাদের ন্যাশনাল আইডি ও অন্যান্য কাগজপত্র জমা দেওয়ারও কথা ছিল। পরবর্তীতে রাত ১০টার দিকে তাদের ডাকাডাকি করে না পেলে দারোয়ান বাচ্চু মিয়াসহ নোমানের বন্ধুরা দরজা ভেঙে নোমানকে ঝুলন্ত অবস্থায় পায়। অন্যদিকে শামীমার মৃতদেহ পাওয়া যায় মেঝেতে চাদরমোড়া অবস্থায়। পুলিশ ও সিআইডির ফরেনসিক টিমের প্রাথমিক ধারণা দাম্পত্যকলহের কারণে স্ত্রী শামীমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আত্মহত্যা করেন নোমান।
আরো পড়ুন:
আকর্ষণীয় বেতনে প্রবাসীর ট্যাক্সিতে চাকরির সুযোগ!
কুয়েতে প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য চালু হচ্ছে নতুন নিয়ম
অপপ্রচারের জবাব দিতে প্রবাসীদের পাশে চান প্রধানমন্ত্রী
ফ্রি ভিসায় সৌদি যেয়ে মিলছে না কাজ, বিপাকে নতুন প্রবাসীরা
ওমানে প্রবাসী ক্যাম্প থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ
আরো দেখুনঃ
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Discussion about this post