বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন বুর্জ খলিফা। আশপাশের অনেক এলাকা থেকে এটি খালি চোখেই দেখা যায়। পর্যটকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু এটি। এমন রোমাঞ্চকর অনুভূতি পেতে আপনাকে যেতে হবে আরব আমিরাতের দুবাই শহরে। ২০১০ সালের ৪ জানুয়ারি ১৬০ তলাবিশিষ্ট বুর্জ খলিফার উদ্বোধন করেন দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সম্মানেই ভবনটির নামকরণ করা হয় বুর্জ খলিফা। সুউচ্চ ‘বুর্জ খলিফা’ মোট কত তলা তা নিয়েও রয়েছে নানা মত।
উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, এর মোট তলার সংখ্যা ১৬০টি। অবশ্য বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেফিরে ১৬০ থেকে ১৬৯ তলার কথাই বেশি এসেছে। তবে সম্পূর্ণ বুর্জ খলিফার মোট তলার সংখ্যা ২০৬। এর মধ্যে ১৬০ তলা পর্যন্ত রয়েছে বিভিন্ন অফিস, আবাসন, মসজিদ, সুইমিংপুল। আর ১৬০ তলার পর থেকে ২০৬ তলা পর্যন্ত আছে ভবনটি পরিচালনায় সহায়ক বিভিন্ন কারিগরি প্রতিষ্ঠান। রকেটের মতো দেখতে ১৬০ তলাবিশিষ্ট বুর্জ খলিফার মোট উচ্চতা ২ হাজার ৭১৭ ফুট। ছয় লাখ বর্গফুটবিশিষ্ট এই ভবনে একসঙ্গে ১২ হাজারেরও বেশি লোকের সমাবেশ হতে পারে। বুর্জ ভবনে ওঠানামার জন্য রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুত গতির ৫৪টি এলিভেটর বা লিফট, যার গতি ঘণ্টায় ৪০ মাইল।
বিলাসবহুল এই ভবনের একেকটি কামরা কেনার জন্য বর্গমিটার প্রতি ক্রেতাদের গুনতে হয়েছে গড়ে ৩৭ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। আর প্রতি বর্গফুট জায়গার মাসিক ভাড়া চার হাজার ডলার বা ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ভবনটিতে ঢুকতে হলেও গুনতে হয় বেশকিছু টাকা। ১৬০ তলা ভবনের মধ্যে ১০০ তলায় যেতে গুনতে হবে ২০০ দিরহাম। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় সাড়ে ৪ হাজার টাকা। আর ১৬০ তলায় যেতে হলে অনুমতি নিয়ে আরো অনেক বেশি দিরহাম গুনতে হয়। ২০০৪ সালে শুরু হয়ে ২০০৯ সালে শেষ হওয়া ভবনটি নির্মাণে চলে বিশাল কর্মযজ্ঞ।
এটি তৈরি করতে একসঙ্গে ১২ হাজার শ্রমিক কাজ করেছে। নির্মাণকালে প্রতি তিন দিনে একেকটি ছাদ ঢালাই দেওয়া হতো। দুবাইয়ে প্রচণ্ড গরমের কারণে কংক্রিট জমাট বাঁধতে পারত না। তাই দিনে অন্য কাজ করে রাতে ছাদ ঢালাই দেওয়া হতো যেন শীতল বাতাসের সংস্পর্শে কংক্রিট সহজেই জমে যেতে পারে। কখনো কংক্রিট জমাট বাঁধতে বরফও ব্যবহার করা হয়েছে। যে পরিমাণ গ্লাস ও স্টিল ব্যবহার করা হয়েছে এই ভবনটি তৈরি করতে, সেগুলো একসঙ্গে রাখতে ১৭টি স্টেডিয়ামের সমান জায়গা প্রয়োজন হতো। ১২৮৩ মাইল লম্বা দেয়াল তৈরি করার মতো ইট-বালি-সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে ভবন নির্মাণে। সম্পূর্ণ ভবনটি তৈরি করতে মোট ব্যয় হয় ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার; বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ১১ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা।
আরো পড়ুন:
বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রবাসীসহ ৩ জনের মৃত্যু
দখলদার ইসরাইলের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করলো কাতার
সৌদি আরবে একদিনে দুই প্রবাসীর মৃত্যু
তিন মাসেও বিমানবন্দরে হারানো লাগেজ ফেরত পাননি প্রবাসীরা
ইয়াবা-অস্ত্র দিয়ে নিজের স্ত্রী-সন্তানকে ফাঁসানোর চেষ্টা
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post