বর্তমান সময়ে পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো পাল্লা দিচ্ছে প্রযুক্তিগত উন্নয়নে। এমন এমন আবিষ্কার করা হচ্ছে, যা টাক লাগিয়ে দিচ্ছে গোটা বিশ্বকে। সম্প্রতি সৌদি প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন সালমান এমন এক শহর তৈরির কথা বিশ্ব বাসীকে জানিয়েছেন, যা ইতিপূর্বে কেউ কল্পনাও করেনি। ৫০ হাজার কোটি ডলার ব্যয়ে সম্পূর্ণ কার্বন মুক্ত অত্যাধুনিক শহর বানাচ্ছে সৌদি আরব।
১৭০ কিমি এই শহরে ১০ লাখ মানুষ বাস করতে পারবে। শহরটি হবে গাড়িমুক্ত, সড়কমুক্ত ও কার্বনমুক্ত। ৫ মিনিট হাঁটার দূরত্ব অতিক্রম করলেই এই নগরের বাসিন্দারা তাদের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে পারবে। কারও অবস্থান থেকে শহরের দূরতম স্থানে পৌঁছাতে সময় লাগবে মাত্র ২০ মিনিট। লোহিত সাগরের নিকটবর্তী এবং তিরানের সমুদ্র উপকূল, মিসর, ইসরায়েল ও জর্ডানের সীমানার কাছের এই শহরটির আয়তন ২৬ হাজার ৫০০ বর্গকিলোমিটার। বর্তমান প্রকল্পের আওতায় ২০২৫ সালের মধ্যে শহরটিকে শিল্প ও আনুষঙ্গিক সুবিধা (লজিস্টিক) পাওয়ার আকর্ষণীয় অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছে সৌদি সরকার। শহরটিকে স্মার্ট সিটি ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
এদিকে সম্প্রতি আরেক খবর দিয়েছে দুবাই। দেশটি শিগগিরই বিশাল চন্দ্রাকৃতির রিসোর্ট তৈরি হতে যাচ্ছে। নির্মিতব্য এই রিসোর্টে চন্দ্রপৃষ্ঠে ভ্রমণের অনুভূতি পাবেন পর্যটকরা। দেশটির ইংরেজি দৈনিক অ্যারাবিয়ান বিজনেস বলেছে, পর্যটকদের সাশ্রয়ী মূল্যে মহাকাশ ভ্রমণের অনুভূতি দিতে রিসোর্টটি নির্মাণের পরিকল্পনা করছে কানাডার স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান মুন ওয়ার্ল্ড রিসোর্ট (এমডব্লিউআর)।
অতি-বিলাসবহুল এই রিসোর্টে অবিকল চন্দ্রপৃষ্ঠের মতো করে একটি রেপ্লিকা থাকবে। ৭৩৫ ফুট উচ্চতার এই রিসোর্ট আগামী ৪৮ মাসের মধ্যে নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ‘মুন দুবাই’ নামের বিলাসবহুল রিসোর্টটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থনীতিতে পর্যটন, বিনোদন, শিক্ষা, প্রযুক্তি, পরিবেশসহ মহাকাশ পর্যটন খাতের মতো একই ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে আশা করছে কানাডার এই স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান।
মুন ওয়ার্ল্ড রিসোর্টের প্রতিষ্ঠাতা স্যান্দ্রা জি ম্যাথিউস এবং মাইকেল আর হেন্ডারসন বলেছেন, পুরো মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং সফল আধুনিক পর্যটন প্রকল্প হবে ‘মুন দুবাই।’ বিশ্বজুড়ে আমিরাতের ব্র্যান্ড এবং অনন্য স্থাপনার আকর্ষণ তুলে ধরবে এই রিসোর্ট। এর ফলে দুুবাই-ভিত্তিক পর্যটকের সংখ্যাও দ্বিগুণ হবে। বছরে অন্তত এক কোটি মানুষ চন্দ্রাকৃতির এই রিসোর্ট ভ্রমণ করতে পারবেন। তিনি বলেন, বিলাসবহুল রিসোর্টটিতে আসা অতিথিদের জন্য স্পা এবং ব্যায়ামাগার, নাইটক্লাব, ইভেন্ট সেন্টার, সম্মেলন কক্ষ, লাউঞ্জ এবং ইন-হাউস ‘মুন শাটল’ সুবিধা থাকবে। রিসোর্টটিতে বিভিন্ন মহাকাশ সংস্থার মহাকাশচারীদের জন্য প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা থাকবে।
অ্যারাবিয়ান বিজনেসের তথ্য অনুযায়ী, কানাডীয় স্থাপত্য এই সংস্থাটি সেখানে ‘স্কাই ভিলা’ তৈরিরও পরিকল্পনা করছে; যা চাঁদের আবাসন এলাকার মতো হবে। অর্থাৎ এই ভিলায় চাঁদের আবাসন এলাকায় বসবাসের মতো অনুভূতি মিলবে। হেন্ডারসন বলেছেন, স্কাই ভিলায় ৩০০টি ইউনিট কিনে নিতে পারবেন যে কেউ। আর এর মাধ্যমে স্কাই ভিলার মালিকরা চন্দ্রাকৃতির এই রিসোর্টের বিশেষ প্রাইভেট মেম্বার ক্লাবের সদস্য হবেন। আমিরাতের আরেক দৈনিক দ্য ন্যাশনাল বলেছে, মুন দুবাইয়ের নির্মাণকাজে ব্যয় হবে প্রায় ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার। রিসোর্টটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে সেখান থেকে প্রত্যেক বছর ১৮০ কোটি মার্কিন ডলারের রাজস্ব আসবে। কানাডীয় ওই স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান কোম্পানির লাইসেন্স সংগ্রহ এবং সম্ভাব্য গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য রোড শো করার পরিকল্পনা করছে। এরপরই কোম্পানিটি এক বছর ধরে প্রাক-নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করবে। পরের চার বছরে বিলাসবহুল এই রিসোর্টের নির্মাণকাজ শেষ করার পরিকল্পনা করছে এমডব্লিউআর। আমিরাত ছাড়াও বিশ্বের চারটি গন্তব্য— উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ এবং উত্তর আফ্রিকা ও এশিয়ায় চন্দ্রাকৃতির রিসোর্ট নির্মাণ করবে কোম্পানিটি।
আরো পড়ুন:
ওমানে গাড়ি ভাংচুর ও চুরির অপরাধে একাধিক ব্যক্তি গ্রেফতার
ঢাকা বিমানবন্দরে প্রবাসীদের পদে পদে ভোগান্তি
বিমানবন্দরে ফ্রি টেলিফোন সুবিধা, সুফল পাবেন প্রবাসীরা
প্রবাসী বাবাকে বাঁচাতে ৭ বছরের মেয়ের আকুতি
সম্মানই যদি না পান, রেমিট্যান্স কেন পাঠাবেন প্রবাসীরা
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post