বাংলাদেশি অভিবাসীদের বড় একটি অংশ কাজ করেন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, ওমান ও বাহরাইনের মতো মধ্যপ্রাচ্যের দেশে। গত কয়েক বছরে মানব পাচারকারীদের নতুন টার্গেটে পরিণত হয়েছেন এসব দেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
দক্ষিণ এশীয় অভিবাসী কর্মীদের কাছে ইউরোপে অভিবাসন লোভনীয় প্রস্তাব। করোনার কারণে সীমান্ত নিষেধাজ্ঞা ছিল৷ তবে বর্তমানে ফের ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মানবপাচারে জড়িত দালালদের দৌরাত্ম্য শুরু হয়েছে। সম্প্রতি ফেসবুক, টেলিগ্রাম ও এবং টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ইউরোপ অভিমুখে মানব পাচারকারীদের মুখরোচক বিজ্ঞাপনে ছয়লাভ। কিন্তু পাচারকারীদের দেয়া তথ্য আর বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।
বর্তমান সময়ে অবৈধপথে ইউরোপে যাওয়ার উল্লেখযোগ্য যে কয়টি রুট রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম রুট হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান। এই দেশ থেকে স্পিড বোটে করে ইরান সেখান থেকে তুরস্ক হয়ে গ্রিসে এরপর বসনিয়াতে। এভাবেই বিভিন্ন দেশের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করেন অনেকেই। সম্প্রতি এমনই তথ্য উঠে এসেছে ডয়েসে ভেলে সহ আন্তর্জাতিক বেশকিছু গণমাধ্যমে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তবে কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ থেকে গণহারে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন শ্রমিক পাঠানো বন্ধ রয়েছে। যারা দীর্ঘদিন ধরে এসব দেশে আছেন তারাও রয়েছেন নানা সমস্যায়। ২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরুর পর সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে বিদেশি শ্রমিকদের কাজের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ ও কোটা আরোপ করা হয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশি অভিবাসীদের কর্মসংস্থানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকেরা স্বল্প দক্ষ হওয়ার কারণে এ ধরনের বিধিনিষেধের কারণে তাঁদের কর্মসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তুলনামূলকভাবে বেশি। অপরদিকে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর প্রবাসীরা দীর্ঘদিন ধরেই সেসব দেশের বেতন কাঠামো নিয়ে অসন্তুষ্ট। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু খাত ছাড়া বেশিরভাগ প্রবাসীদের পক্ষে নাগরিকত্ব পাওয়া কিংবা স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পাওয়ায় সম্ভব নয়।
পাশাপাশি বাংলাদেশে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বল্প বেতন কাঠামোতে দেশের পরিবার এবং বিদেশে নিজের খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেক প্রবাসী। এমন অনেক বাস্তবিক সমস্যাকে হাতিয়ার করে বিজ্ঞাপনের ফাঁদ পেতেছে মানব পাচার চক্রগুলো। এতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিতে গিয়ে মৃত্যু হয়। আবার অনেকেই নিঃস্ব হয়ে দেশে ফেরেন। তাই দালালদের খপ্পরে পা না দিতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা।
আরো পড়ুন:
ব্ল্যাক আউট ওমান, চরম দুর্ভোগে মানুষ
অর্থবছরের শুরুতে স্বস্তির বার্তা দিচ্ছে প্রবাসী আয়
কুয়েতে নতুন নির্দেশনা অমান্য করলে গুনতে হবে জরিমানা
বিমানবন্দরে আর ট্রলির সমস্যা হবে না, জানালেন বিমান প্রতিমন্ত্রী
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Discussion about this post