অবশেষে বাস্তবায়ন হচ্ছে ৬০ বিলিয়ন ডলারের বহুল আলোচিত ইরান-ওমান গ্যাসলাইন। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে সাগরের নিচ দিয়ে ইরানের গ্যাস যাবে প্রতিবেশী ওমানে। চলতি সপ্তাহে ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. ইব্রাহিম রাইসির সফরের পর ইতিমধ্যেই শুরু হচ্ছে ৬০ বিলিয়ন ডলারের গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্প।
প্রায় দশ বছর ধরে আটকে থাকা এই মেগা প্রকল্পের কাজ অবশেষে শুরু হচ্ছে। ইরানের বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. ইব্রাহিম রাইসির ওমান সফরের সময় এ প্রকল্পটিকে এগিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। সমুদ্রের তলদেশে পাইপলাইন প্রকল্পের চুক্তিটি প্রথম স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২০১৩ সালে। এটি ইরান থেকে ওমানের মুসান্দাম প্রদেশ দিয়ে গ্যাস সরবরাহ করবে ওমানে।
দামের মতবিরোধের কারণে চুক্তিটি প্রায় ১০ বছর ধরে আটকে রাখা হয়েছিল। গত ২০১৫ সালের পারমাণবিক পরিকল্পনা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাহার করলে, প্রকল্পটি আরও বিলম্বিত হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্যাস প্রকল্পের নতুন করে শুরু হওয়া সময়োপযোগী। কারণ ইউরোপীয় দেশগুলো ইউক্রেনের আগ্রাসনের পর রাশিয়ার কাছথেকে গ্যাস সরবরাহে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ হামুদ আল সাইফি বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে ওমানের নতুন রাজস্ব তৈরি হবে। সারা বিশ্বে সরবরাহকারীদের কাছে ইরানি গ্যাস বাজারজাত করার অধিকার থাকবে। এর ফলে এ প্রকল্পের লজিস্টিক, সাপ্লাই চেইন, নিরাপত্তা এবং প্রশাসনে এমনকি অ্যাকাউন্টস ও ফাইন্যান্সের অনেক শূন্যপদে তরুণ ওমানিদের চাকরির সুযোগ হবে।
ওমান বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ইরানের প্রেসিডেন্টের একদিনের সফরে দুই দেশের মধ্যে সামুদ্রিক, সরবরাহ, কৃষি, মৎস্য, শিল্প, শিক্ষা এবং নির্মাণ খাত সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। উল্লেখ্য: ২০১৩ সালে ৬০ বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্প চালু করতে ইরান-ওমান চুক্তি করেছিল। চুক্তিতে সাগরের নিচ দিয়ে পাইপলাইন নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়।
২০১৬ সালে দেশ ২টি প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে চেষ্টা করে। এর পরের বছর পাইপলাইনের গতিপথ পরিবর্তন করা হয়। তবে কিছুদিন পর ওমানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণে ভিন্নমতের কারণে প্রকল্প বাস্তবায়ন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর, ২০১৮ সালে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে বের হয়ে এসে উপসাগরীয় দেশটির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিলে মুখ থুবড়ে পড়ে প্রকল্পটি।
জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর ওয়াশিংটন সেই চুক্তি পুনরুদ্ধারে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোকে নিয়ে ভিয়েনায় আবার আলোচনা শুরু করে। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরু হলে নতুন করে চুক্তিতে পৌঁছানোর আগ মুহূর্তে আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্বব্যাপী জ্বালানী সংকটের মধ্যে আবারও প্রাণ ফিরে পেতে পারে বহুদিন আগের এই হারিয়ে যাওয়া প্রকল্প।
আরো পড়ুন:
সবাই আমার স্ত্রীকে চোরের বউ বলে আমাকে জামিন দেন
পাসপোর্ট অফিসে কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য, অনুসন্ধানে দুদক
প্রবাসী বন্ডে কমছে মুনাফার হার
করোনা মোকাবিলায় ওমানের চেয়েও এগিয়ে বাংলাদেশ
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post